메뉴 건너뛰기

Grace Xn Library

প্রভুর দিন ২

হাইডেলবার্গ প্রশ্নোত্তর

৩। প্রশ্ন: আপনি কোথা থেকে আপনার দুর্দশার কথা জানতে পারেন?

উত্তর: ঈশ্বরের বিধান থেকে।

৪। প্রশ্ন: ঈশ্বরের বিধান আমাদের কাছ থেকে কী চায়?

উত্তর: মথি ২২:৩৭-৪০ পদের সারাংশে, খ্রীস্ট তা আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন, ‘‘তোমার সমস্ত অন্তঃকরণ, তোমার সমস্ত প্রাণ ও তোমার সমস্ত মন দিয়ে, তোমার ঈশ্বর প্রভুকে প্রেম করবে। এটি মহৎ ও প্রথম আজ্ঞা। আর দ্বিতীয়টি এর ন্যায়; তোমার প্রতিবেশিকে নিজের মতো প্রেম করবে। এই দুই আজ্ঞাতেই সমস্ত বিধান এবং ভাববাদীগ্রন্তও ঝুলছে।’’

৫। প্রশ্ন: আপনি কি এ সমস্ত নিখুঁতভাবে পালন করতে পারেন?

উত্তর: আদৌ না; কারণ আমি আমার প্রকৃতিতে ঈশ্বর এবং আমার প্রতিবেশির প্রতি ঘৃণা প্রবণ।

শাস্ত্রপাঠ: ২বিবরণ ৫:৬-২১; রোমীয় ৭:৭-১২; মথি ২২:৩৪-৪০

১৯৪৫ খ্রীস্টাব্দের ৬ই আগষ্ট হিরোশিমা শহরে কী ঘটেছিল, তা কি আমরা কল্পনা করতে পারি? আমেরিকার একটি যুদ্ধবিমান পারমানবিক বোমা ফেলতে এগিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু সেই শহরের বুকে কত মানুষ চলাফেরা করছিল, যারা এ রকম কোনও বিপদ সম্বন্ধে কিছুই জানত না। যদিও তারা ধ্বংস হতে চলেছিল, অথবা তাদের চেহারা ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করতে চলেছিল, কিন্তু দুঃখের বিষয় হল, সেই বিপদ সম্বন্ধে তাদের কিছুই জানা ছিল না। তাদের অবস্থান (position) ছিল খুবই মারাত্মক (খুব শীঘ্র তাদের উপর বোমা বর্ষণ), এবং তাদের পরিস্থিতি (condition) ছিল খুবই মারাত্মক (আগামী বিপদ সম্বন্ধে তাদের অজ্ঞতা)।

অবশ্য এর অর্থ এই নয় যে, বাইবেলে যে সমস্ত বিধান লেখা হয়েছে, তা যারা পায়নি, তারা যে পাপী, এ বিষয়ে তারা একেবারেই কিছু জানে না। না, বাইবেল আমাদের পরিষ্কার শিক্ষা দেয় যে, তারা পাপী এবং ঈশ্বরের ক্রোধ ও অভিশাপের নিচে তাদের অবস্থান, এ বিষয়ে প্রত্যেকেরই কিছু জ্ঞান আছে। যেমন শাস্ত্র আমাদের বলে, ‘‘কারণ যে অইহুদিরা কোনও বিধান পায়নি, তারা যখন স্বভাবত বিধান মেনে আচরণ করে, তখন কোনও বিধান না পেলেও নিজেদের বিধান নিজেরাই হয়। যেহেতু তারা বিধানের কাজ নিজের নিজের হৃদয়ে লিখিত বলে দেখায়, তাদের সংবেদও সঙ্গে সঙ্গে সাক্ষ্য দেয়, এবং তাদের নানা বিতর্ক পরস্পর হয়, তাদের দোষী করে, না হয় তাদের পক্ষ সমর্থন করে’’ (রোমীয় ২:১৪-১৫)।

অন্যভাবে বলা যেতে পারে, যারা বইবেল পায়নি, তারাও যে পাপী, এ বিষয়ে তাদের কিছু জ্ঞান আছে। সামান্য হলেও, তারা কিছু পরিমাণে উপলব্ধি করে যে, তাদের ঈশ্বরকে ভয় করার কারণ আছে। কিন্তু লক্ষ্য করা বিষয় হল, আমরা তাদের এই উপলব্ধিকে ‘কিছু পরিমাণে’ বলেছি। আমরা এ কথা বলি, কারণ পাপের বিভিন্ন পরিণামের মধ্যে একটি হল, সংবেদ বা বিবেকের এই স্বরকে দুর্বল করা। লোকে যত বেশি পাপ করে, তাদের হৃদয় তত বেশি কঠিন হয়। ফলস্বরূপ, তাদের সংবেদ ও বিবেকের স্বর দুর্বল হয়ে পড়ে। এই কারণে, সংবেদ একাকী তাদের ভয়ানক বিপদ থেকে তাদের জাগাতে যথেষ্ট নয়। তাই, পৌল বলেছেন, ‘পাপ কী, তা জানতাম না, কেবল বিধান দ্বারা জেনেছি’’ (রোমীয় ৭:৭)। পৌল একজন ইহুদি ছিলেন। এর অর্থ, জন্ম থেকেই তিনি বিভিন্ন বিশেষ অধিকারে অধিকারী ছিলেন। তাঁর শৈশব থেকে তাঁকে বিধান শিক্ষা দেওয়া হয়েছিল। তবুও কিছু কালের জন্য তিনি ঈশ্বরের সামনে তাঁর মারাত্মক অবস্থান ও পরিস্থিতি উপলব্ধি করতে পারেননি। এ বিষয়ে পৌল নিজে বলেছেন, ‘‘আর আমি এক সময় বিধান ছাড়াই জীবিত ছিলাম, কিন্তু যখন আজ্ঞা এল, পাপ জীবিত হল, ও আমি মরলাম’’ (রোমীয় ৭:৯)। এখানে, পৌল যখন এক সময় ‘জীবিত ছিলাম,’ বলেছেন, তখন তার দ্বারা বলতে চেয়েছেন, সেই সময় তিনি নিজের বিষয় যে চিন্তা করতেন, তা হল, তাঁর সমস্ত বিষয় তেমন মন্দ ছিল না। কিন্তু বিধান প্রকৃত অর্থে কী শিক্ষা দেয়, তা যখন তিনি উপলব্ধি করতে শুরু করেন, তখন সবই পাল্টাতে শুরু করে। তখন তাঁর হৃদয়ে ইতিমধ্যে যে পাপ ছিল, তা ‘অতি মাত্রায় পাপময় (অতিশয় পাপীষ্ঠ)’’ হয়ে ওঠে (রোমীয় ৭:১৩)। তাই, পৌল উত্তমতর অভিজ্ঞতার দ্বারা তাঁর পাপের প্রতি তাঁর বন্দিত্ব সম্বন্ধে সত্যকে জানতে পারেন।

কিন্তু আমরা যখন বলি, এই বিধান আমাদের মারাত্মক অবস্থান ও পরিস্থিতি প্রদর্শন করে, তখন তার অর্থ কী (কোন বিধান)? এই প্রশ্নের উত্তর আমরা দুইভাবে দিতে পারি, এবং এর দুটি দিককেই আমরা হাইডেলবার্গ প্রশ্নোত্তরে দেখতে পাই। এই প্রশ্নের উত্তর দেবার একটা পথ হল, ঈশ্বর সিনয় পর্বতে যে দশ আজ্ঞা দিয়েছিলেন (যাকে আমরা যাত্রাপুস্তক ২০ অধ্যায়ে এবং ২বিবরণ ৫ অধ্যায়ে পাই), তাকেই এখানে বিধান বলা হয়েছে। আর দ্বিতীয় পথে এর উত্তর হল, বিধানের সারাংশ, যা আমাদের প্রভু বিবৃত করেছিলেন (মথি ২২ অধ্যায়)। উভয় উত্তরেরই প্রাথমিক অর্থ এক। তারা দুটি ভিন্ন  কিন্তু সমানভাবে প্রযোজ্য, এমন আকারে একই নৈতিক মানকে বর্ণনা করে। কিন্তু প্রশ্নোত্তরের এই অংশে এদের মধ্যে দ্বিতীয় আকারটিকে কেন ব্যবহার করা হয়েছে, তার ভালো কারণ আছে। আমাদের দশ আজ্ঞা দেবার পিছনে ঈশ্বরের কেবল একটাই কারণ ছিল, এমন কথা চিন্তা করা ভুল হবে। ঈশ্বর আমাদের এই সমস্ত বিধান দিয়েছিলেন কেন? এর দ্বারা যে কেবল আমাদের পাপ সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল করতে (যেন আমাদের পরিত্রাণের জন্য আমরা যীশুর খোঁজ করি), তা নয়; কিন্তু আমরা কী প্রকার জীবন যাপন করব (আমাদের পরিত্রাণের জন্য যেন আমরা তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রদর্শন করি), সে বিষয়ে ঈশ্বরের ইচ্ছা কী, তা-ও প্রদর্শন করতে। এই কারণে, খ্রীস্টবিশ্বাসীর জীবন-যাপনের নক্সা হিসাবে প্রশ্নোত্তরের পরবর্তী অংশে দশ আজ্ঞার ব্যাখ্যা করা হয়েছে। কিন্তু এখানে আমরা প্রধান যে বিষয়টির উপর জোর দিতে চাই, তা হল, এই দুই আকারের মধ্যে কোনও নৈতিক পার্থক্য নেই। আমরা যদি সঠিক পথে দশ আজ্ঞা পালন করি, তা হলে, আমরা আমাদের ঈশ্বর ও প্রতিবেশিকে প্রেম করব। একইভাবে, যথার্থ উপায়ে আমরা যদি ঈশ্বর ও প্রতিবেশিকে প্রেম করি, তা হলে, আমরা দশ আজ্ঞাও পালন করব।

সহজ কথা হল, ঈশ্বর আমাদের কাছে যে কোনও মূল্যে নিখুঁততা আশা করে থাকেন। বাইবেলের সর্বত্র আমরা এই শিক্ষাকে দেখতে পাই। লেবীয় ১৯:২ পদে আমরা পাঠ করি: ''তোমরা পবিত্র হও, কারণ আমি সদাপ্রভু তোমাদের ঈশ্বর পবিত্র।'' আমাদের প্রভু যীশু তাঁর পর্বতে দত্ত উপদেশে একই কথা বলেছেন, ''তোমাদের স্বর্গীয় পিতা যেমন সিদ্ধ (নিখুঁত), তোমরাও তেমনই সিদ্ধ (নিখুঁত) হও'' (মথি ৫:৪৮)। এই কারণে হাইডেলবার্গ প্রশ্নোত্তরের ৫ম প্রশ্ন হল: ''আপনি কি এ সমস্ত (বিধান) নিখুঁতভাবে পালন করতে পারেন?'' সততা বজায় রেখে, এই প্রশ্নের উত্তর হল, আমাদের পক্ষে তা সম্ভব নয়। কিন্তু এখানে আমরা যে বিষয়টির উপর জোর দিতে চাই, তা হল, ঈশ্বরের মান হল নিখুঁততা, তার থেকে কম কিছু নয়। পাপী মানুষের দিক থেকে, এই সত্যের সঙ্গে আপোষ করা কিংবা এই সত্যকে অস্বীকার করার যে কোনও চেষ্টা, নিরাশাপূর্ণ মিথ্যা বিশ্বাস ছাড়া কিছু নয়। আমরা যখন এই সত্যকে দেখতে শুরু করি, তখন আমরা উপলব্ধি করি, ঈশ্বর তাঁর বিধানের মাধ্যমে আমাদের কী শিক্ষা দিতে চেয়েছিলেন। আর আমরা যখন আমাদের অবস্থান ও পরিস্থিতি সম্বন্ধে এই অপ্রিয় সত্যকে আঁকড়ে ধরি, তখন আমরা যীশু খ্রীস্টকে আমাদের একমাত্র সান্ত্বনা হিসাবে আমাদের প্রয়োজনকে উপলব্ধি করি।

번호 제목 글쓴이 날짜 조회 수
19 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 19_QUESTIONS 50~52 Sujoy 2020.03.12 3464
18 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 18_QUESTIONS 46~49 Sujoy 2020.03.12 506
17 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 17_QUESTIONS 45 Sujoy 2020.03.12 511
16 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 16_QUESTIONS 40~44 Sujoy 2020.03.12 621
15 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 15_QUESTIONS 37~39 Sujoy 2019.10.16 918
14 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 14_QUESTIONS 35~36 Sujoy 2019.10.16 1387
13 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 13_QUESTIONS 33~34 Sujoy 2019.10.16 612
12 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 12_QUESTIONS 29~31~32 Sujoy 2019.10.16 2532
11 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 11_QUESTIONS 29~30~28 Sujoy 2019.10.16 1814
10 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 10_QUESTIONS 27~28 Sujoy 2019.10.16 1374
9 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 09_QUESTIONS 26 Sujoy 2019.10.16 634
8 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 08_QUESTIONS 24~25 Sujoy 2019.08.01 2593
7 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 07_QUESTIONS 20~23 Sujoy 2019.08.01 3295
6 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 06_QUESTIONS 16~19 Sujoy 2019.08.01 642
5 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 05_QUESTIONS 12~15 Sujoy 2019.06.20 1095
4 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 04_QUESTIONS 09~11 Sujoy 2019.06.12 842
3 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 03_QUESTIONS 06~08 Sujoy 2019.06.04 119401
» HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 02_QUESTIONS 03~05 Sujoy 2019.05.28 612
1 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 01_QUESTIONS 01~02 Sujoy 2019.05.26 501