메뉴 건너뛰기

Grace Xn Library

প্রভুর দিন ২০

হাইডেলবার্গ প্রশ্নোত্তর

৫৩। পবিত্র আত্মা সম্বন্ধে আপনি কী বিশ্বাস করেন?

উত্তর: প্রথমত, তিনি পিতা ঈশ্বর ও পুত্র ঈশ্বরের সঙ্গে একাধারে সত্য ও অনন্ত ঈশ্বর; দ্বিতীয়ত, সত্য বিশ্বাসের দ্বারা খ্রীস্টে ও তাঁর সমস্ত উপকারে অংশগ্রহণ করতে, আমাকে সান্ত্বনা দিতে, এবং আমার সঙ্গে চিরকাল থাকতে, আমাকে পবিত্র আত্মা দেওয়া হয়েছে।

শাস্ত্রপাঠ:

১করিন্থীয় ১২:১-২৭;

যোহন ১৪:১৬-২৬; ১৫:২৬- ১৬:১৫; রোমীয় ৮:১-১৭

সমসাময়িক চিন্তার প্রেক্ষাপটে, হাইডেলবার্গ প্রশ্নোত্তরের পদক্ষেপে কিছু অসমাঞ্জস্যতা আমাদের চোখে পড়ে। কারণ, এই প্রশ্নোত্তর পবিত্র আত্মার ব্যক্তিত্ব ও কার্যের প্রতি আমাদের দৃষ্টি তেমন আকর্ষিত করে না। যদিও খ্রীস্টের ব্যক্তিত্ব ও কার্য সম্বন্ধে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন ও তাদের উত্তরকে আমরা দেখতে পাই, কিন্তু পবিত্র আত্মা সম্বন্ধে কেবল এই একটি প্রশ্ন ও উত্তর হাইডেলবার্গ প্রশ্নোত্তরে বর্তমান। আজকের দিনে বিভিন্ন মণ্ডলীতে এর ঠিক বিপরীত বিষয় আমাদের চোখে পড়ে। কারণ, সেখানে পবিত্র আত্মার উপর প্রভু যীশুর থেকেও অনেক অনেক বেশি দৃষ্টি কেন্দ্রীভূত করা হয়। কিন্তু সমসাময়িক চিন্তা থেকে পৃথক চিন্তা খারাপ বিষয় নয়, যদি আমরা ঈশ্বরের বাক্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রাখি। আর হাইডেলবার্গ প্রশ্নোত্তর এই কাজটিই করেছে।

বাইবেল নিজে পবিত্র আত্মার ব্যক্তিত্ব ও কার্যের উপর তেমন বেশি জোর দেয় না। কারণ, সেটা শাস্ত্রের মূল কেন্দ্রীয় বিষয় নয়। এখন, পবিত্র শাস্ত্র যদিও পবিত্র আত্মার দ্বারা আনুপ্রাণিত, তবুও এটা কী করে সম্ভব হল? যীশু যখন এই পৃথিবী ত্যাগ করে পিতার কাছে ফিরে যাচ্ছিলেন, তখন তিনি তাঁর শিষ্যদের বলেছিলেন, তিনি তাঁদের 'অনাথ' রেখে যাবেন না (যোহন ১৪:১৮)। না, যীশু তাঁদের কাছে প্রতিজ্ঞা করে বলেন, তিনি তাঁদের কাছে 'আর এক সহায়' পাঠাতে চলেছেন (যোহন ১৪:১৬), যিনি হলেন পবিত্র আত্মা। আর তিনি প্রধানত কোন কাজ করার জন্য আসতে চলেছেন? যীশু তা ব্যাখ্যা করে বলেছেন, "তিনি সমস্ত বিষয়ে তোমাদের শিক্ষা দেবেন, এবং তোমাদের কাছে কথিত আমার সমস্ত বাক্য তোমাদের স্মরণ করিয়ে দেবেন" (যোহন ১৪:২৬)। "তিনি নিজে থেকে কিছুই বলবেন না, তিনি যা শুনবেন, তিনি কেবল তাই বলবেন . . . তিনি আমাকেই মহিমান্বিত করবেন" (যোহন ১৬:১৩-১৪)।

এখানে, খ্রীস্টের কাজ ও পবিত্র আত্মার কাজকে পাশাপাশি রেখে তুলনা করা হয়েছে। খ্রীস্ট যখন পৃথিবীতে ছিলেন, তখন তাঁর লক্ষ্য কী ছিল? তিনি কি নিজেকে মহিমান্বিত করেছিলেন? তাঁর নিজের ব্যক্তিত্বের প্রতি কি তিনি লোকদের আকর্ষিত করেছিলেন? উত্তর খুবই পরিষ্কার। "খ্রীস্ট নিজে পরিচর্যা পেতে আসেননি, কিন্তু পরিচর্যা করতে এসেছিলেন- এবং তাঁর জীবন অনেকের  পরিবর্তে মুক্তিপণ হিসাবে দিতে এসেছিলেন" (মার্ক ১০:৪৫)। তিনি তাঁর নিজের ইচ্ছা পূর্ণ করতে নয়, কিন্তু তাঁকে যিনি পাঠিয়েছিলেন, তাঁর ইচ্ছা পালন করতে এসেছিলেন। তাই, তিনি নিজেকে গৌরবান্বিত করেননি। তিনি পিতাকে গৌরবান্বিত করেছিলেন। তাঁর সারা জীবনের লক্ষ্য ছিল, নিজেকে নত-নম্র করা এবং পিতাকে উন্নীত করা। আর এখন পবিত্র আত্মা এসেছেন, তিনি নিজেকে গৌরবান্বিত করতে আসেননি, কিন্তু যীশুকে গৌরবান্বিত করতে এসেছেন

কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, পিতা ঈশ্বর কিংবা পুত্র ঈশ্বর থেকে পবিত্র আত্মা ঈশ্বর অপেক্ষাকৃত কম সম্মানিত ব্যক্তি। নিঃসন্দেহে, একদিন আসবে, যখন পবিত্র আত্মার কাজ শেষ হবে- আর্থাৎ, খ্রীস্টের প্রায়শ্চিত্তের দ্বারা যে মুক্তি ক্রয় করা হয়েছে, তার প্রয়োগ কাজ- তা শেষ হবে। আর তখন তাঁর কাজ এখন আমরা যে পরিমাণে উপলব্ধি করেছি, তার থেকে অনেক বেশি উপলব্ধি করব। তাই, পবিত্র আত্মার পরিবর্তে খ্রীস্টের প্রতি আমাদের দৃষ্টি কেন্দ্রীভূত করে, হাইডেলবার্গ প্রশ্নোত্তর বাইবেলভিত্তিক সঠিক কাজই করেছে।

বাইবেল আমাদের শিক্ষা দেয়, পবিত্র আত্মা হলেন ঈশ্বর। শাস্ত্রানুসারে, ঈশ্বর এক, এবং পবিত্র আত্মা হলেন সেই এক ঈশ্বরের এক ব্যক্তি, যিনি পিতা ঈশ্বর ও পুত্র ঈশ্বরের ব্যক্তিত্ব থেকে পৃথক। মথি ২৮:১৯ পদে, এই সত্য আমরা পরিষ্কার দেখতে পাই: "অতএব, তোমরা যাও ও সমস্ত জাতি থেকে শিষ্য তৈরি করো, পিতার ও পুত্রের ও পবিত্র আত্মার নামে তাদের বাপ্তিস্ম দাও।" এখানে, আমাদের প্রভু যেহেতু কেবল একটি নামের কথা  (in the name of) বলেছেন, কেবল সেই এক সত্তার সঙ্গে সম্পর্কে মানুষদেরকে বাপ্তাইজিত করতে হবে। কিন্তু এই একটি নাম যেহেতু একইভাবে পিতার ও পুত্রের  ও পবিত্র আত্মার  নাম, সেইহেতু এর পরিষ্কার অর্থ, তিন ব্যক্তি বর্তমান, যাদের প্রত্যেকে সমানভাবে এই ঐশ্বরিক নামের আধিকারী। এই কারণে, যখন অননীয় ও সাফীরা পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে মিথ্যাকথা বলেছিল (প্রেরিত ৫:৩), শাস্ত্র আমাদের বলে, তখন তারা ঈশ্বরের বিরুদ্ধেই মিথ্যাকথা বলেছিল (প্রেরিত ৫:৪)। আর যখন এমন কথা বলা হয়েছে যে, আমাদেরকে পবিত্র আত্মার নামে বাপ্তাইজিত হতে হবে, তখন তার পরিষ্কার অর্থ হল, তিনিও আমাদের পরিত্রাণের ঈশ্বর। পবিত্র আত্মার মহান কাজ ছাড়া আমরা পরিত্রাণ পাইনি।

এই সত্য যিনি উপলব্ধি করেন, তিনি আরও উপলব্ধি করেন যে, এক অর্থে, সমগ্র প্রশ্নোত্তর পবিত্র আত্মার ব্যক্তিত্ব ও কার্য সম্বন্ধীয়। যখন আমরা বিশ্বাস সম্বন্ধে পাঠ করি, যেমন ২১ সংখ্যক প্রশ্নোত্তর, তখন আমরা শিক্ষা পাই, পবিত্র আত্মাই এই বিশেষ উপহার আমাদের মধ্যে তৈরি করেন। আবার, ৩১ সংখ্যক প্রশ্নোত্তরে, আমরা যখন মশীহ হিসাবে আমাদের প্রভুর আভিষেক সম্বন্ধে পাঠ করি, তখন আমাদের মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, পবিত্র আত্মাই আমাদের প্রভুকে ৩টি পদের জন্য সজ্জিত করেছিলেন। আবার, পবিত্র আত্মাই সুসমাচার ও মাণ্ডলিক সংস্কারের দ্বারা আমাদের জন্য খ্রীস্টের প্রায়শ্চিত্তের অর্থ শিক্ষা দেন (৬৭ সংখ্যক প্রশ্নোত্তর)। তাই, বাইবেলভিত্তক পথে, পবিত্র আত্মার পূর্ণ গৌরব দেখার উপায় হল, পরোক্ষভাবে দেখা। অন্যভাবে বলা যায়, খ্রীস্টের সঙ্গে সংযুক্ত করতে এবং খ্রীস্টের গৌরব স্বীকার করতে, পবিত্র আত্মা যে সমস্ত মহান কাজ করেন, তাদের দেখার মাধ্যমে, আমরা পবিত্র আত্মার গৌরব দেখতে পাই।

প্রশ্নোত্তরে যে বিষয়টি ধরে নেওয়া হয়েছে, তা হল, খ্রীস্টবিশ্বাসীদের মধ্যে পবিত্র আত্মা বাস করেন, যেহেতু তাদের প্রতি পবিত্র আত্মা দত্ত হয়েছেন। এই শিক্ষা জনপ্রিয় পেন্টিকোস্টাল শিক্ষার সম্পূর্ণ বিপরীত, কারণ তারা শিক্ষা দেন, খ্রীস্টকে বিশ্বাস করার পর, খ্রীস্টবিশ্বাসীদের পবিত্র আত্মা দেওয়া হয়- অতিরিক্ত বা দ্বিতীয় আশীর্বাদ হিসাবে। আর তাই, তাদের শিক্ষা মণ্ডলীকে বিভিন্ন স্তরে বিভক্ত করে। নিচের স্তরে সাধারণ খ্রীস্টবিশ্বাসীদের অবস্থান। তারা কেবল খ্রীস্টে বিশ্বাস, পাপক্ষমা, অনন্তজীবনের অধিকারী। কিন্তু উপরের স্তরে যাদের অবস্থান, তারা পবিত্র আত্মার দানের (বা বিভিন্ন দানের) অধিকারী। এই শিক্ষা সম্পূর্ণ বাইবেল-বিরুদ্ধ। পঞ্চাশত্তমীর দিনে যে ঘটনা ঘটেছিল, তা পৃথিবীর ইতিহাসে এক ও অদ্বিতীয় (আনন্য) ঘটনা (প্রেরিত ২ অধ্যায়)। মরিয়মের গর্ভে খ্রীস্টের জন্ম বা তাঁর স্বর্গারোহণের ন্যায় এই ঘটনারও পুনরাবৃত্তি সম্ভব নয়। যীশু খ্রীস্ট একবারই তাঁর আত্মাকে বা পবিত্র আত্মাকে প্রেরণ করেছেন বা বর্ষণ করেছেন। খ্রীস্টের দেহ, তথা মণ্ডলীর মধ্যে বসবাসের জন্য পবিত্র আত্মা একবারই নেমে এসেছিলেন। আর আমরা যদি খ্রীস্টের হই, তা হলে, আমরা তাঁর দেহেরও সদস্য-সদস্যা। আর এর কারণ হল, আমাদের মধ্যে ইতিমধ্যে পবিত্র আত্মা বাস করেন। আমাদের মধ্যে পবিত্র আত্মা বাস না করলে, আমরা কখনও খ্রীস্টের হতে পারতাম না।

번호 제목 글쓴이 날짜 조회 수
» HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 20_QUESTIONS 53 Sujoy 2020.03.12 676
19 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 19_QUESTIONS 50~52 Sujoy 2020.03.12 3568
18 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 18_QUESTIONS 46~49 Sujoy 2020.03.12 609
17 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 17_QUESTIONS 45 Sujoy 2020.03.12 605
16 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 16_QUESTIONS 40~44 Sujoy 2020.03.12 734
15 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 15_QUESTIONS 37~39 Sujoy 2019.10.16 1032
14 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 14_QUESTIONS 35~36 Sujoy 2019.10.16 1500
13 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 13_QUESTIONS 33~34 Sujoy 2019.10.16 718
12 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 12_QUESTIONS 29~31~32 Sujoy 2019.10.16 2634
11 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 11_QUESTIONS 29~30~28 Sujoy 2019.10.16 1922
10 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 10_QUESTIONS 27~28 Sujoy 2019.10.16 1510
9 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 09_QUESTIONS 26 Sujoy 2019.10.16 756
8 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 08_QUESTIONS 24~25 Sujoy 2019.08.01 2698
7 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 07_QUESTIONS 20~23 Sujoy 2019.08.01 3395
6 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 06_QUESTIONS 16~19 Sujoy 2019.08.01 763
5 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 05_QUESTIONS 12~15 Sujoy 2019.06.20 1218
4 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 04_QUESTIONS 09~11 Sujoy 2019.06.12 964
3 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 03_QUESTIONS 06~08 Sujoy 2019.06.04 119780
2 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 02_QUESTIONS 03~05 Sujoy 2019.05.28 714
1 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 01_QUESTIONS 01~02 Sujoy 2019.05.26 606