메뉴 건너뛰기

Grace Xn Library

প্রভুর দিন

হাইডেলবার্গ প্রশ্নোত্তর

২৬ প্রশ্ন: "আমি ঈশ্বরে বিশ্বাস করি, যিনি স্বর্গ ও পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা, সবশক্তিমান পিতা?"  আপনি যখন এই কথা বলেন, তখন কী বিশ্বাস করেন:

উত্তর: আমাদের প্রভু যীশু খ্রীস্টের অনন্ত পিতা, যিনি শূন্য থেকে স্বর্গ ও পৃথিবী এবং তাদের মধ্যবর্তী সমস্ত বিষয় সৃষ্টি করেছেন; যিনি তাঁর অনন্ত পরিকল্পনা ও সদয় তত্ত্বাবধানের দ্বারা সেই সমস্তকে ধারণ ও নিয়ন্ত্রণ করে চলেছেন; তিনি খ্রীস্টের কারণে আমার ঈশ্বর ও আমার পিতা; আমি কোনো সন্দেহ না করে তাঁতে এই আস্থা রাখি যে, আমার শরীর ও আত্মার জন্য যে সমস্ত বিষয়ের প্রয়োজন, তিনি সবই জোগাবেন; এমনকী, চোখের জলের উপত্যকায়, যে সমস্ত মন্দ বিষয় তিনি আমার প্রতি ঘটতে দেন, তাদেরও তিনি আমার মঙ্গলার্থে রূপান্তরিত করবেন; যেহেতু সর্বশক্তিমান ঈশ্বর হওয়ায়, তিনি তা করতে সক্ষম, এবং বিশ্বস্ত পিতা হওয়ায়, তিনি তা করতেও ইচ্ছুক।

শাস্ত্রপাঠ:

মথি ১৪:-২১; যোহন ২:১-১১; ২পিতর ৩:১-১৩

হাইডেলবার্গ প্রশ্নোত্তর যখন লেখা হয়েছিল, তখন সৃষ্টির মতবাদ যেমন মনে করা হয়, তেমন বিতর্কের মুখোমুখি হয়নি। কিন্তু এই কথা এখন আর প্রযোজ্য নয়। এখন, খ্রীস্টবিশ্বাসী বলে নিজেদের পরিচয় দেয়, এমন লোকও পর্যন্ত সৃষ্টির পক্ষে ঈশ্বরের মহত্ব স্বীকার করতে চান না। নিঃসন্দেহে, এর কারণ হল, মিথ্যা বিবর্তনবাদের প্রচণ্ড প্রভাব। এই মতবাদের প্রাথমিক বিষয় সকল এখানে আলোচনা করা যেতে পারে। বস্তুসমৃদ্ধ বিশ্বভূমণ্ডলকে অনন্ত চিন্তা করা হয়, এবং তা ক্রমশ পরিবর্তিত হয়ে চলেছে। সুদীর্ঘ কাল ধরে বিভিন্ন সম্ভাবনার ফলস্বরূপ আমাদের পৃথিবী আজকের এই আকার নিয়েছে বলে ধরা হয়।

বাইবেলের শিক্ষার সম্পূর্ণ বিপরীত, এর থেকে বেশি কিছুই হতে পারে না। তবুও অদ্ভুৎ বিষয় হল, অনেক খ্রীস্টবিশ্বাসী সৃষ্টিতত্ত্বের সঙ্গে বিবর্তনবাদকে মেলাতে চেষ্টা করেন এবং তাদের চিন্তায় সেই তত্ত্বকে তারা ঈশ্বরকেন্দ্রিক বিবর্তনবাদ আখ্যা দিয়ে থাকেন। আর এই পথে বলা হয়ে থাকে, একজন খ্রীস্টবিশ্বাসী ঈশ্বরে বিশ্বাসের পাশাপাশি একইসঙ্গে বর্তমান যুগের বিজ্ঞানীদের সেই চিন্তায় বিশ্বাস করতে পারে, যা বলে কোটি কোটি বৎসরের বিবর্তনের ফলস্বরূপ আমাদের পৃথিবী আজকের এই চেহারা নিয়েছে।

যারা এইভাবে আপোষ করে থাকেন, তাদের অন্যতম প্রধান যুক্তি হল, বিশ্বভূমণ্ডলকে দেখে অনেক দিনের পুরানো বলে মনে হয়। তারা বলে থাকেন, ঈশ্বর যদি এমন সৃষ্টি করে থাকেন, যাকে দেখে মনে হয় অনেক দিনের পুরানো, কিন্তু আসলে তা বেশি দিনের নয়, তা হলে, তিনি তার দ্বারা আমাদের ভুল পথে পরিচালিত করেছেন। এর বিরুদ্ধে আমাদের উত্তর হল, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। দেখতে পুরানো এমন বিষয় সৃষ্টি করে ঈশ্বর কাউকেই ভুল পথে পরিচালিত করেননি। পরিবর্তে তিনি এর দ্বারা তাঁর ক্ষমতা প্রকাশ করেছেন। বাইবেলের কিছু অলৌকিক কাজের মধ্যে আমরা একে পরিষ্কার দেখতে পাই। আমরা ৩টি নির্দিষ্ট অলৌকিক কাজের ঘটনাকে চিন্তা করতে পারি: (১) তেলের অলৌকিক জোগান (২ রাজা ৪:১-৭); (২) জলকে দ্রাক্ষারসে রূপান্তর (যোহন ২:১-১১); এবং (৩) পাঁচ হাজার লোককে আহারদান (মথি ১৪:১৫-২১)। এই তিনটি অলৌকিক কাজের প্রতিটির ক্ষেত্রে, ঈশ্বর তাঁর সৃজনশীল ক্ষমতাকে মঞ্জরিত করেছেন। আর প্রতিটির ক্ষেত্রে, তাৎক্ষণিকভাবে যা অস্তিত্ব লাভ করেছে, তাকে দেখে মনে হয়েছে, অনেক দিনের পুরানো। উদাহরণস্বরূপ, তিনি কান্না নগরের বিবাহভোজে যে দ্রাক্ষারস তৈরি করেছিলেন, তা যারা পান করেছিল, তাদের মনে হয়েছিল, তা সবথেকে পুরানো, যেহেতু দ্রাক্ষারস যত পুরানো হয়, তত স্বাদযুক্ত হয়। অর্থাৎ গুণমানের বিচারে যীশুর অলৌকিক কাজের ফলস্বরূপ তৈরি দ্রাক্ষারস সবথেকে পুরানো বলে মনে হয়েছিল। কিন্তু আমরা জানি, তাদের খাবার কিছুক্ষণ আগে যীশু সেই দ্রাক্ষারস তৈরি করেছিলেন। এর দ্বারা কি আমাদের প্রভু কাউকে ভুল পথে পরিচালিত করেছিলেন? না, কখনো না। পরিবর্তে, তিনি কেবল তাঁর ঐশ্বরিক ক্ষমতার প্রকাশ রেখেছিলেন।

পবিত্র শাস্ত্রে আমরা যে বিবরণ পাই, তা থেকে একথা খুবই স্পষ্ট যে, মানুষের  ক্ষেত্রে, বিবর্তনের কোনো প্রেক্ষাপটকে চিন্তা করা সম্ভব নয়। যে সমস্ত তথ্য থেকে এই কথা আমরা জানি, তারা হল: (১) আদিপুস্তক আমাদের কেবল এই কথা বলে না যে, ঈশ্বর আদমকে মাটি থেকে তৈরি করেছিলেন (২:৭), কিন্তু তা আরো বলে, মানুষ সেই মাটিতে ফিরে গিয়ে মারা যায় (৩:১৯)। ঈশ্বরের আত্মা দ্বারা অনুপ্রাণিত লেখক, মোশি, এই দুই সত্যকে সমান্তরালভাবে দেখেছেন। যেহেতু মানুষ তার মৃত্যুতে মানুষের কোনো পূর্ব অস্তিত্বে ফিরে যায় না, এর দ্বারা মোশি চেয়েছেন, আমরা যেন মানুষকে অন্য কোনো অস্তিত্ব থেকে বিবর্তিত হবার কথাও চিন্তা না করি। (২) আমরা আরও জানি, "আদমকে প্রথমে তৈরি করা হয়েছিল, এবং তারপর হবাকে" (তীমথিয় ২:১৩)। বিবর্তনবাদের কোনো প্রজনন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এমন ঘটনা ঘটার কোনো সম্ভাবনা নেই। যেহেতু সময়ের ব্যবধানে কোনো প্রজাতির পুরুষ ও স্ত্রীর অস্তিত্বের কোনো প্রশ্নই ওঠে না। এই ঘটনা ঘটার পক্ষে একমাত্র উপায় হল, ঈশ্বর তাদেরকে সরাসরি সৃষ্টি করেছিলেন। তাই, অনেকে আছেন, যারা এই কথা মেনে নিয়ে থাকেন যে, ঈশ্বর মানুষকে দেখতে পূর্ণবয়স্ক করে সৃষ্টি করেছিলেন। তবুও তারা সৃষ্টির অবশিষ্টাংশকে দেখতে পুরানো লাগায়, তাকে সমস্যা জ্ঞান করে থাকেন। (৩) পৌলের লেখা সবথেকে বড় পত্র, তথা রোমীয় পত্রে আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশকে দেখতে পাই (রোমীয় ৫:১২-২১)। ইতিহাসের শুরুতে ঈশ্বরের দ্বারা যদি সত্যই একজন মানুষকে সৃষ্টি করা হয়ে থাকে, তাহলে আমরা অল্প মাত্রায় হলেও উপলিব্ধ করতে পারি, আমরা সকলে এখন এই পরিস্থিতিতে কীভাবে উপস্থিত হয়েছি। সমস্ত মানুষ কেন পাপী, তা-ও আমরা উপলব্ধি করতে পারি। কেবল তাই নয়, আমরা আরও উপলব্ধি করি, যীশু খ্রীস্টের উদ্ধারকারী কাজের মাধ্যমে ঈশ্বর এক নতুন মানবজাতিকে সৃষ্টি করতে সক্ষম।

বাইবেলের মতবাদসমূহের মধ্যে আন্তর-সম্পর্ক বর্তমান। তারা সকলে মিলে একটি সিসটেম গঠন করেছে। বাইবেলে যে সমস্ত মতবাদ শিক্ষা দেওয়া হয়েছে, আমরা যখন তাদের গ্রহণ করি ও বিশ্বাস করি, তখন আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় সান্ত্বনা ও দৃ প্রত্যয় লাভ করি। একদিকে, আমরা যখন খ্রীস্টের সঙ্গে সহভাগিতায় থাকি, তখন আমরা ঈশ্বরকে আমাদের প্রতি করুণাময় ও দয়াপূর্ণ দেখতে পাই। কিন্তু অন্যদিকে, আমরা আরও দেখতে পাই, আমাদের সান্ত্বনা কেবল ঈশ্বরের দয়ার উপর স্থাপিত নয়, কিন্তু তা সেই সত্যের উপরও স্থাপিত যে, তিনি সেই সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, যিনি এই বিশ্বভূমণ্ডল সৃষ্টি করেছেন। আবার, তিনি যেহেতু সমস্তের সৃষ্টিকর্তা, সেইহেতু তাদের উপর কর্তৃত্ব করাও তাঁর পক্ষে কঠিন বিষয় নয়। এমনকী যে সমস্ত বিষয় বা সমস্যা আমাদের কল্পনাকে পর্যন্ত জট পাকিয়ে দেয়, সেগুলি তাঁর ক্ষমতার বাইরে নয়। আমরা, উদাহরণ হিসাবে মৃত্যুর সমস্যাকে চিন্তা করতে পারি। একজন মানুষ যখন মারা যায়, তখন আমরা তার মৃতদেহকে কবরে রাখি। তার দেহকে সংরক্ষণ করার জন্য আমরা যথাসম্ভব চেষ্টা করি (এর পক্ষে বাইবেলে বিভিন্ন নজির আছে)। কিন্তু আমরা জানি, তাতে পঁচন ধরবে ও তা ক্ষয় পাবে (আক্ষরিক অর্থে)। তা হলে, আমরা কীভাবে বিশ্বাস করতে পারি যে, শেষ দিনে সেই শরীর পুনরায় একইভাবে উত্থাপিত হবে? এর যে একমাত্র উত্তর সম্ভব, তা হল, কীকরে তা ঘটবে, সে বিষয়ে আমাদের কোনো ধারণা নেই। কিন্তু আমরা জানি, তা অবশ্যই ঘটবে। কারণ আমরা যখন সৃষ্টির সত্য সম্বন্ধে চিন্তা করি, তখন তা বিশ্বাস করতে আমাদের তেমন কষ্ট হয় না! এখন, আমাদের চোখের সামনে যে বিষ্ময়কর বিশ্বভূমণ্ডল বর্তমান, তা যেহেতু ঈশ্বর সৃষ্টি করেছেন। তিনি কথা বলেছেন, আর তা আকার ধারণ করেছে। ছয় দিনে তিনি তাকে নিখুঁত আকার দিয়েছেন। তা যদি তিনি করতে পারেন, তা হলে, আমার মৃতদেহকে পুনরায় উত্থাপিত করাকে আমি কেন সন্দেহ করব?

শূন্য থেকে সৃষ্টির মতবাদ খ্রীস্টধর্মে একটি মৌলিক শিক্ষা। বাইবেলের মাধ্যমে ঈশ্বর নিজেকে প্রকাশ না করলেও, এবং যীশু খ্রীস্টের ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বে তিনি যদি নিজেকে প্রকাশ না-ও করতেন, তবুও এই সত্য বিশ্বাস না করার পক্ষে আমাদের কোনো অজুহাত থাকত না (রোমীয় ১:২০)। কিন্তু সত্য হল, বাইবেলে ঈশ্বর নিজেকে প্রকাশ করেছেন এবং যীশু খ্রীস্টে ঈশ্বর নিজেকে প্রকাশ করেছেন। আর আমাদের প্রভু মহান মহান কাজ করেছিলেন। তিনি দেখিয়েছেন, তাঁর কথায় সকলই সাধিত হয়েছে। তিনি আদেশ করেছেন আর বিভিন্ন বিষয় অস্তিত্ব লাভ করেছে। তাই, আমরা বিশ্বাস করি, যীশু খ্রীস্টের দ্বারা সধিত বিভিন্ন অলৌকিক কাজ হল, সৃষ্টির মতবাদের পক্ষে সাক্ষ্য। আমরা কখনও ঈশ্বরের বিষ্ময়কর ক্ষমতাকে খাটো করার লক্ষ্যে আমাদের চিন্তাকে প্রশ্রয় দেব না।

বিজ্ঞান কেবল সেই সমস্ত বিষয়ের মুকাবিলা করতে পারে, যাদের ইতিমধ্যে অস্তিত্ব আছে। যে সমস্ত বিষয় ইতিমধ্যে অস্তিত্বের অধিকারী, তাদের অস্তিত্ব কীভাবে এল, তা আমাদের বলতে, বিজ্ঞানের কোনো বিশেষ ক্ষমতা নেই। এখানে এসে আমাদের বিশ্বাস করা ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই। (একজন খ্রীস্টবিশ্বাসীর ন্যায় বিবর্তনবাদীও "বিশ্বাস করে"। কিন্তু সে সৃষ্টিকর্তার পরিবর্তে, সৃষ্টবস্তুতে বিশ্বাস করে।) ইব্রীয় ১১:৩ পদে বলা হয়েছে, "বিশ্বাসে আমরা বুঝতে পারি, বিশ্বভূমণ্ডল ঈশ্বরের বাক্য দ্বারা গঠিত হয়েছে, সুতরাং কোনো প্রত্যক্ষ বস্তু থেকে এই সকল দৃশ্যগ্রাহ্য বস্তুর উৎপত্তি হয়নি।" ঈশ্বর আমাদের আশীর্বাদ করুন, আমরা যেন বিশ্বাস করি এবং তাঁর গৌরব ও সম্মানের ক্ষেত্রে কখনও কোনো আপোষ না করি।

번호 제목 글쓴이 날짜 조회 수
19 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 19_QUESTIONS 50~52 Sujoy 2020.03.12 3466
18 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 18_QUESTIONS 46~49 Sujoy 2020.03.12 509
17 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 17_QUESTIONS 45 Sujoy 2020.03.12 511
16 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 16_QUESTIONS 40~44 Sujoy 2020.03.12 624
15 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 15_QUESTIONS 37~39 Sujoy 2019.10.16 921
14 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 14_QUESTIONS 35~36 Sujoy 2019.10.16 1387
13 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 13_QUESTIONS 33~34 Sujoy 2019.10.16 615
12 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 12_QUESTIONS 29~31~32 Sujoy 2019.10.16 2533
11 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 11_QUESTIONS 29~30~28 Sujoy 2019.10.16 1817
10 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 10_QUESTIONS 27~28 Sujoy 2019.10.16 1377
» HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 09_QUESTIONS 26 Sujoy 2019.10.16 636
8 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 08_QUESTIONS 24~25 Sujoy 2019.08.01 2595
7 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 07_QUESTIONS 20~23 Sujoy 2019.08.01 3297
6 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 06_QUESTIONS 16~19 Sujoy 2019.08.01 644
5 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 05_QUESTIONS 12~15 Sujoy 2019.06.20 1097
4 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 04_QUESTIONS 09~11 Sujoy 2019.06.12 845
3 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 03_QUESTIONS 06~08 Sujoy 2019.06.04 119404
2 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 02_QUESTIONS 03~05 Sujoy 2019.05.28 614
1 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 01_QUESTIONS 01~02 Sujoy 2019.05.26 501

Powered by XE.