HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 18_QUESTIONS 46~49
2020.03.12 13:58
প্রভুর দিন ১৮
হাইডেলবার্গ প্রশ্নোত্তর ৪৬। তিনি স্বর্গারোহণ করলেন, এই
কথাকে আপনি কীভাবে উপলব্ধি করেন? উত্তর: খ্রীস্ট তাঁর শিষ্যদের
দৃষ্টিতে পৃথিবী থেকে স্বর্গে গৃহীত হয়েছিলেন, এবং জীবিত ও মৃতদের বিচার করতে আসার
আগে পর্যন্ত তিনি সেখানে আমাদের জন্য ক্রমশ অবস্থান করছেন। ৪৭। তা হলে, তিনি যে প্রতিজ্ঞা
করেছেন, যুগান্ত পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে সঙ্গে থাকবেন, তা কি ঠিক নয়? উত্তর: খ্রীস্ট একাধারে সত্য
মানুষ ও সত্য ঈশ্বর: তাঁর মানুষ প্রকৃতি অনুসারে, তিনি আর পৃথিবীতে নেই; কিন্তু তাঁর ঈশ্বর প্রকৃতি, মহত্ব, অনুগ্রহ ও আত্মা
অনুসারে, তিনি কখনও আমাদের কাছ থেকে দূরে নন। ৪৮। কিন্তু তাঁর ঈশ্বর প্রকৃতি
যেখানে বর্তমান, সেখানে যদি তাঁর মানুষ প্রকৃতি উপস্থিত না থাকে, খ্রীস্টের এই দুই
প্রকৃতি কি একে অন্যের থেকে পৃথক? উত্তর: না, তা কখনও সত্য নয়; যেহেতু ঈশ্বর প্রকৃতির
কোনো সীমা নেই ও তা সর্বত্র বিরাজমান, সেইহেতু তিনি যে মানুষ প্রকৃতি ধারণ করেছেন,
তা (ঈশ্বর প্রকৃতি) তার সীমার বাইরে, তবুও তা সত্ত্বেও, তিনি এই মানুষ প্রকৃতির
অধিকারী ও ব্যক্তিগতভাবে তার সঙ্গে সংযুক্ত। ৪৯। খ্রীস্টের স্বর্গারোহণ আমাদের
প্রতি কী কী সুবিধা জোগায়? উত্তর: প্রথমত, স্বর্গে তাঁর
পিতার কাছে উপস্থিতিতে তিনি আমাদের পক্ষে উকীলের কাজ করছেন; দ্বিতীয়ত, বন্ধক (জমানত)
হিসাবে আমাদের ন্যয় মানুষ প্রকৃতির অধিকারী হয়ে স্বর্গে থাকায়, তিনি, আমাদের মস্তক
হয়ে, তাঁর সদস্য আমাদেরকেও তাঁর কাছে গ্রহণ করবেন; তৃতীয়ত, বায়না হিসাবে তাঁর আত্মা আমাদের প্রতি প্রেরণ করায়,
যাঁর ক্ষমতায় আমরা সেই ঊর্ধ্বের বিষয় সকলের চেষ্টা করি, যেখানে খ্রীস্ট বর্তমান,
ঈশ্বরের ডান দিকে উপবিষ্ট, এবং পৃথিবীর বিষয় সকলের চেষ্টা করি না। শাস্ত্রপাঠ: প্রেরিত ১:১-১১; কলসীয় ১:১৩-২৩; ১করিন্থীয় ১৫:২৫-২৮ পুনরুত্থানই একমাত্র শব্দ নয়, আজ যার ভুল ব্যাখ্যা করা হয়। স্বর্গারোহণেরও
ভুল ব্যাখ্যা করা হয়। আজ অনেকের কাছে, এই শব্দের অর্থ, দেহের মৃত্যর পর আত্মার
কোনো এক প্রকার ক্রমশ আস্তিত্ব ছাড়া আর কিছু নয়। বলা হয়ে থাকে, মানুষরা আজ এতখানি
বাস্তববুদ্ধিসম্পন্ন যে, খ্রীস্টের স্বর্গারোহণের ন্যায় যে কাহিনী বাইবেলে পাওয়া
যায়, তাকে সত্যি ঘটে ছিল, এমন বিষয় হিসাবে চিন্তা করা সম্ভব নয়। না, তারা বলে
থাকেন, সহজ কথায়, এ হল, বিজ্ঞানের যথেষ্ট বিকাশের পূর্বে মানুষদের আভ্যন্তরীণ
অভিজ্ঞতা প্রকাশের উপায়। আর সেই আভ্যন্তরীণ অভিজ্ঞতাটা কী? ভালো, তা হল, কোনো না কোনোভাবে যীশু ক্রমশ তাঁর অস্তিত্ব
রক্ষা করেছিলেন। আর বিজ্ঞানের আলো পায়নি, এমন ব্যক্তি, একে কীভাবে প্রকাশ করতে
পারে? ভালো, তাঁরা বলে থাকেন, তারা
তাদের আদিম মহাবিশ্বতত্ত্বের পরিভাষায় তা প্রকাশ করতে বাধ্য। আর তা কী? তা হল, সেই চিন্তা, যা বিশ্বভূমণ্ডলকে
তিনটি ভাগে ভাগ করে: "ওই উপরে" স্বর্গ; "নিচে" নরক; আর পৃথিবী তাদের
মাঝামাঝি। তাই, তারা যে অভিজ্ঞতা লাভ করেছিল, তাকে বর্ণনা করতে গিয়ে, তারা এই কথা
বলেছে, যীশু স্বর্গে গেছেন। কিন্তু
একটু আমরা একটু থেমে এক মুহূর্তের জন্য চিন্তা করে দেখতে পারি। এই কথাকে কি আমরা সত্যি মেনে নিতে পারি? আজ আমরা সকলেই জানি, পৃথিবী গোলাকার, আর পৃথিবী নামক
গ্রহের চারদিকে আকাশ ঘিরে আছে। হ্যাঁ, ঠিক কথা, কিন্তু আকাশে যখন কোনো রকেটকে জুম
করে আমাদের দেখানো হয়, তখন আমরা টেলিভিশনে কী দেখতে পাই, বা কী শুনতে পাই? ভালো, আমাদের বলা হয়, আমরা দেখতে পাচ্ছি, রকেটটি উপরে
উঠে যাচ্ছে। এমনকী বাস্তববুদ্ধিসম্পন্ন বিজ্ঞানীরা পর্যন্ত সেখানে দাঁড়িয়ে দেখেন,
রকেটটি উপরে উঠে যাচ্ছে এবং মেঘের মধ্যে দৃষ্টির বাইরে চলে যাচ্ছে। আবার সন্ধ্যার
খবরে তারা আমাদের আরও জানন হয়, রকেটটি কেবল "উপরে" উঠে যায়নি, কিন্তু তা কখন "নিচে" নেমে আসবে, তা-ও জানায়। তা হলে, এটা কত পরিষ্কার যে, খ্রীস্টের
শিষ্যরা যে রিপোর্ট দিয়েছিলেন, তা তাঁরা বিজ্ঞানমনষ্ক না হওয়ায়, প্রাক-বিজ্ঞানভিত্তিক
সময়ে বাস করার কারণে, এমনভাবে বর্ণনা করেছিলেন। না, তারা এইভাবে তার বর্ণনা
করেছিলেন, যেহেতু যখন কোনো ব্যক্তি এই গ্রহ ত্যাগ করেন, তখন তা সর্বদা এইভাবেই আমাদের
চোখে ধরা পড়ে। আর সহজ সত্য হল, আমাদের প্রভু যীশু খ্রীস্ট অবশ্যই এই পৃথিবী ছেড়ে
চলে গিয়েছিলেন। তিনি উপরে উঠে গেছেন- আরও দূরে চলে গেছেন- পৃথিবী থেকে দূরবর্তী বিশ্বভূমণ্ডলের
কোনো একটি স্থানে গেছেন, যেখানে তাঁর সন্তানদের জন্য তিনি স্থান প্রস্তুত করতে
গেছেন। আবার যখন সেই নির্দিষ্ট সময় উপস্থিত হবে, তখন তিনি ফিরে আসবেন। তিনি আবার
যে স্থান থেকে ফিরে আসতে চলেছেন ও তাঁর সন্তানদের সঙ্গে মিলিত হতে চলেছেন, সেই
স্থানকে আমরা স্বর্গ বলে থাকি। আমরা জানি, যীশু আর এই পৃথিবীতে নেই,
যেহেতু তিনি তাঁর পিতার সঙ্গে মিলিত হতে গেছেন। এখন, তিনি ঈশ্বরের ডান হাত হয়ে
রাজত্ব করে চলেছেন, এবং যতদিন পর্যন্ত তিনি তাঁর সমস্ত শত্রুকে (এবং তাঁর
সন্তানদের শত্রুদের ও মৃত্যুকে) তাঁর পদতলে না রাখেন, ততদিন পর্যন্ত তিনি তাঁর
রাজত্ব চালিয়ে যাবেন। আর শেষ শত্রু হল মৃত্যু, এবং মৃত্যুও পরাভূত হবে। এই ঘটনা
ঘটবে সেই শেষদিনে, যেদিন জীবিত ও মৃত, ধার্মিক ও অধার্মিক, সমস্ত মানুষের বিচার
করতে যীশু আসবেন। এই কারণে, আজকের দিনে, "যীশুর উপস্থিতি" সম্বন্ধে আমরা যাদের ভাবানুভূতির কথা শুনি, তাদের সঙ্গে
রাজি হতে পারি না। একটি অর্থে, যীশু অবশ্যই তাঁর সন্তানদের সঙ্গে আছেন (এবং তিনি শেষদিন
পর্যন্ত তাদের সঙ্গে থাকবেন)। কিন্তু তাঁর স্বর্গারোহণের পূর্বে তিনি যেভাবে তাদের
সঙ্গে ছিলেন, কিংবা তাঁর দ্বিতীয় আগমণের পরে তিনি যেভাবে তাদের সঙ্গে থাকবেন, তিনি
সেইভাবে আজ তাদের সঙ্গে নেই। ব্যক্তি হিসাবে, ঈশ্বর-মানুষ যীশু এখন পৃথিবীতে অনুপস্থিত।
কবরের মধ্যে যারা যীশুর খোঁজ করেছিল, স্বর্গদূত তাদের বলেছিল, "তিনি এখানে নেই, কারণ তিনি উঠেছেন" (মথি ২৮:৬), আজ আমাদেরও একই কথা বলতে হবে- আজ
যীশু আমাদের মধ্যে তাঁর মানুষ প্রকৃতিতে নেই (যেমন তিনি তাঁর পুনরুত্থানের পর ৪০
দিন আমাদের মধ্যে ছিলেন)। কিন্তু যুগান্তে, তথা শেষদিনে, তিনি যখন পুনরায় এখানে
আসবেন, তখন তিনি আমাদের মধ্যে থাকবেন। তাই, একদিকে, এই কথার উপর জোর
দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, পবিত্র আত্মার ব্যক্তিত্ব ও কাজের মাধ্যমে যীশু আাজ আমাদের
মধ্যে উপস্থিত। সত্য হল, পবিত্র আত্মার মহান কাজ হল (লিখিত আকারে ঈশ্বরের বাক্যে ও
বাক্যের মাধ্যমে), প্রভু যীশু খ্রীস্টের বিষয় সকল গ্রহণ করা ও তা আমাদের কাছে
প্রকাশ করা। ঠিক যেমন যীশু তাঁর শিষ্যদের বলেছিলেন, "যে আমাকে দেখেছে, সে পিতাকে দেখেছে" (যোহন ১৪:৯)। একইভাবে, আজ আমরাও বলতে পারি, "যার হৃদয়ে পবিত্র আত্মা বাস করেন, তার সঙ্গে যীশুও
থাকেন।" অন্যদিকে, যে বিষয়টি আমাদের কাছে পরিষ্কার হতে হবে, তা
হল, আজ আমাদের মধ্যে খ্রীস্টের যে আধ্যাত্মিক উপস্থিতি বর্তমান, তার সঙ্গে ভবিষ্যতে
আমাদের মধ্যে আমাদের প্রভুর যে শারীরিক উপস্থিতি হবে, তাদের মধ্যে বড়ো পার্থক্য। এই
দুইয়ের মধ্যে পার্থক্যকে গুলিয়ে ফেললে, আমরা স্বর্গারোহণকে ভুল বুঝব। আজ এক ধরণের মিথ্যা ভক্তির আচরণ
আমাদের চোখে পড়ে, যা এই ভুল চিন্তাকে প্রতিফলিত করে। আমরা তা সেই সমস্ত গানের
কথার মধ্যে দেখতে পাই, যারা এমন ভান করে যেন, গোলাপের পাঁপড়ি থেকে শিশির পড়ার
আগে আমরা সেই যীশুর সঙ্গে দেখা করতে পারি, যিনি বাগানে হেঁটে চলে বেড়াচ্ছেন। আমরা
এই কথা সেই সমস্ত উপদেশের মধ্যে শুনতে পাই, যেগুলির বার্তা পুনরুত্থিত ও
স্বর্গারোহণকারী খ্রীস্টের মধ্যে সীমাবদ্ধ, সেই ছোট্ট যীশু, যিনি আমাদের হৃদয়ে
বসবাস করেন। (হ্যাঁ, আবশ্যই, এর মধ্যে একটি সত্য বর্তমান। কিন্তু আমরা যে বিষয়
বলতে চাইছি, তা হল, সুসমাচারকে ছোট্ট গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ করা। যীশু আমার মধ্যে বাস
করেন, তা যতখানি না গুরুত্বপূর্ণ, তার থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল, যীশু পিতার দক্ষিণে
উপবিষ্ট এবং সেখান থেকে তিনি তাঁর আত্মা দ্বারা আমার উপর রাজত্ব করেন)। আমরা
আবশ্যই সমস্ত দিক থেকে কৃতজ্ঞ হব যে, যুগান্ত পর্যন্ত আমাদের প্রভু যীশু আমাদের
সঙ্গে সঙ্গে আছেন (পবিত্র আত্মার ব্যক্তিত্ব ও কাজের মাধ্যমে)। কিন্তু তা আমাদের
কাছে কোনোভাবেই সান্ত্বনার কারণ হবে না, যদি আমরা একই সময়ে জানতাম না যে, একদিন
তিনি ফিরে আসবেন এবং আমরা তাঁকে আমাদের চোখ দিয়ে, তাঁর সমস্ত গৌরবে দেখতে পাব। আর
সেই মুহূর্তও হবে তাঁর পুনরুত্থান ও স্বর্গারোহণের ন্যায় আক্ষরিক ও ঐতিহাসিক। তাঁর পুনরুত্থানের পর ৪০ দিন, তিনি
যেমন তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে ছিলেন, ঠিক সেইভাবে আজ তিনি আমাদের সঙ্গে নেই। কিন্তু
তিনি আমাদের সঙ্গে আছেন ও যুগান্ত পর্যন্ত তিনি আমাদের সঙ্গে সঙ্গে থাকবেন (মথি ২৮:২০)। এর একটাই কারণ: যীশু খ্রীস্ট কেবল মানুষ নন, তিনি ঈশ্বরও বটে। যেহেতু তিনি ঈশ্বর, সেইহেতু
তিনি সর্বত্র বিরাজমান। আবার, একই সময়ে, তিনি মানুষ হওয়ায়, তিনি তাঁর মানুষ
প্রকৃতিতে সর্বত্র অবস্থান করতে পারেন না। কারণ, একজন মানুষ কোনো একটি সময় কেবল
একটি স্থানেই থাকতে পারে। এই সত্যের কোনো একটি দিককে যদি আস্বীকার করা হয়, তা হলে,
সুসমাচারকে অস্বীকার করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, লুথারেনরা, খ্রীস্টের দেহের অস্পষ্টতার
মতবাদের কথা বলে থাকে। এই মতবাদ অনুসারে, স্বর্গারোহণের পরবর্তী সময় থেকে খ্রীস্টের
মানুষ প্রকৃতি বাস্তবে সর্বত্র আবস্থান করে। এই কারণে, এই দাবি করা হয় যে, খ্রীস্টের
দেহ ও রক্ত প্রভুর ভোজের রুটি ও দ্রাক্ষারসের মধ্যে আক্ষরিক অর্থে বর্তমান। কিন্তু
এই কথা হল শাস্ত্রের বিপরীত কথা, কারণ শাস্ত্র বলে, "খ্রীস্টকে স্বর্গ নিশ্চয়ই গ্রহণ করে রাখবে, যে পর্যন্ত
না সমস্ত বিষয়ের পুনঃস্থাপনের কাল উপস্থিত হয়।" (প্রেরিত ৩:২১)। যখন শিষ্যরা যীশুর খালি কবরের
কাছে উপস্থিত হয়েছিল, তখন স্বর্গদূত তাদের বলেছিল, "তিনি এখানে নেই" (লূক ২৪:৬)। যীশুর পুনরুত্থিত শরীর একই সময়ে একাধিক স্থানে
অবস্থান করতে পারে না, যেহেতু তা তখনও মানুষের দেহ ছিল। তাঁর স্বর্গারোহণের
মাধ্যমে এ বিষয়ের কোনো পরিবর্তন হয়নি। তাই, স্বর্গদূতরা এই কথা বলেছিল, "এই যে যীশু তোমাদের কাছ থেকে স্বর্গে ঊর্ধ্বে নীত হলেন, তাঁকে
যেভাবে স্বর্গে যেতে দেখলে, তিনি সেইভাবে আগমন করবেন " (প্রেরিত ১:১১)। যীশু তাঁর মানুষ প্রকৃতিতে আমাদের
থেকে দূরবর্তী, এই সত্য কোনো আসুবিধার বা প্রতিকূলতার বিষয় নয়। পরিবর্তে, যীশু
নিজে যেমন ভাববাণী করেছিলেন, তা হল সুবিধার বিষয়। তাঁর মানুষ-প্রকৃতিতে, একই সময়ে তিনি
সর্বত্র আবস্থান করতে পারতেন না। কিন্তু যে মুহূর্তে তিনি তাঁর মানুষ প্রকৃতির দিক
থেকে আমাদের কাছ থেকে দূরবর্তী হয়েছেন, তিনি অন্য একভাবে আমাদের সহবর্তী হয়েছেন। আর
এই অন্য পদ্ধতি হল, পবিত্র আত্মার মাধ্যমে, যিনি কেবল ঈশ্বর হওয়ায়, এবং মানুষ না
হওয়ায়, একই সময়ে সর্বত্র আবস্থান করতে সক্ষম। আর যেহেতু, আমাদের প্রভু যীশু, তাঁর ঈশ্বর
প্রকৃতিতে, পবিত্র আত্মার সঙ্গে একই সত্ত্বার আধিকারী, তিনি আত্মার মাধ্যমে আমাদের
মধ্যে উপস্থিত। একইসঙ্গে, প্রশ্নোত্তর আমাদের যে বিষয় স্মরণ করিয়ে দেয়, তা হল, এখন
একজন, যিনি আমাদের ন্যায় মানুষ প্রকৃতির অধিকারী, "তিনি স্বর্গে পিতা ঈশ্বরের কাছে উপস্থিত।" হ্যাঁ, "পিতার কাছে আমাদের এক উকীল আছেন, তিনি ধার্মিক যীশু
খ্রীস্ট" (১যোহন ২:১)। যদিও বিষয়টি চিন্তা করলে বিচলিত
হতে হয়, তবুও বিষয়টি সত্য, আর তা হল, এখন যিনি এই বিশ্বভূমণ্ডলের উপর কর্তৃত্ব
করছেন, তিনি একজন মানুষ! আর এ হল সেই বিস্ময়কর গ্যারান্টি
যে, আমাদের ভবিষ্যৎ কখনও আশাহীন হতে পারে না। আর যীশু যদিও (তাঁর মানুষ প্রকৃতিতে)
আমাদের কাছে অনুপস্থিত, তিনি পবিত্র আত্মার দ্বারা আমাদের হৃদয়ে বাস করতে সক্ষম, যাঁকে
তিনি পাঠিয়েছেন, যেন তিনি আমাদের সান্ত্বনা দেন ও রক্ষা করেন। শেষকথা হল, যীশুর বিষয় জনপ্রিয়
আলোচনা ও বাইবেলের সত্যের মধ্যে প্রচুর পার্থক্য বর্তমান। এই যে সমস্ত কথা আমরা
যীশুর বিষয় শুনতে পাই, তারা ঈশ্বরপুত্রকে "আমাদের মধ্যে ছোট্ট যীশুতে" রূপান্তরিত করে। আমরা গানের সেই
কথাকে চিন্তা করতে পারি: "তিনি জীবিত, তিনি জীবিত, খ্রীস্ট
যীশু আজ জীবিত।" গানের শেষ হয়েছে, এই কথা বলে, "তুমি প্রশ্ন কর, আমি কীকরে জানি, তিনি জীবিত? তিনি আমার হৃদয়ে বাস করেন।" এটা কখনও বাইবেলের চিন্তা বা
ধারণা নয়। আমরা জানি, যীশু জীবিত, কারণ বাইবেলে ঈশ্বর তা আমাদের বলেন, এবং যেহেতু পবিত্র
আত্মা (যাঁকে যীশু পাঠিয়েছেন) বাইবেলের এই সত্য আমাদের হৃদয়ে প্রতিপন্ন করে। আর
যদিও এক অর্থে, যীশু অবশ্যই আমাদের হৃদয়ে অবস্থান করেন, ঠিক কথা, কিন্তু আমরা যেন কখনও
ভুলে না যাই যে, আমাদের প্রভু এখন আমাদের থেকে দূরে পিতার দক্ষিণে বসে আছেন। সেখান
থেকে তিনি খুব তাড়াতাড়ি আসতে চলেছেন, যখন সমস্ত চোখ তাঁকে দেখতে পাবে। আমরা যদি
এই কথা ভুলে যাই, তা হলে, বুঝতে হবে, আমরা স্বর্গারোহণের সত্য উপলব্ধি করতে ব্যর্থ
হয়েছি।