HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 16_QUESTIONS 40~44
2020.03.12 13:50
প্রভুর দিন ১৬ হাইডেলবার্গ প্রশ্নোত্তর ৪০। প্রশ্ন: মৃত্যু পর্যন্ত নিজেকে নম্র করার কী প্রয়োজন ছিল খ্রীস্টের? উত্তর: কারণ, ঈশ্বরের ন্যায়বিচার
ও সত্যের যুক্তি অনুসারে, ঈশ্বরের পুত্রের মৃত্যু ছাড়া, অন্য কোনোভাবে আমাদের পাপের পরিতুষ্টি (satisfaction) সম্ভব ছিল না। ৪১। প্রশ্ন: তাঁকে
কেন কবরস্থ করা হয়েছিল? উত্তর: তিনি যে সত্যিই মারা
গেছেন, তার পক্ষে প্রমাণ দিতে। ৪২। প্রশ্ন: খ্রীস্ট
যেহেতু আমাদের জন্য মারা গেছেন, তা হলে, আমাদের আবার কেন মরতে হবে? উত্তর: আমাদের মৃত্যু আমাদের পাপের পরিতুষ্টি নয়, কিন্তু তা হল কেবল পাপের প্রতি
মৃত্যু ও অনন্ত জীবনে প্রবেশ।
৪৩। প্রশ্ন: ক্রুশের
উপর খ্রীস্টের দুঃখভোগ ও মৃত্যু থেকে আমরা আরও কী কী উপকার লাভ করি? উত্তর: তাঁর ক্ষমতায় আমাদের
পুরাতন সত্তা তাঁর সঙ্গে ক্রুশবিদ্ধ, হত ও কবরস্থ হয়, যেন মাংসের মন্দ অভিলাষ আমাদের
উপর কর্তৃত্ব না করতে পারে, কিন্তু
আমরা নিজেদেরকে তাঁর কাছে ধন্যবাদের বলি হিসাবে উৎসর্গ করতে পারি। ৪৪। প্রশ্ন: তিনি
নরকে নামলেন, এই কথা কেন যোগ করা হয়েছে? উত্তর: আমি যখন মহত্তম প্রলোভনের
মুখোমুখি হই, তখন এর দ্বারা নিশ্চিত হতে পারি, এবং নিজেকে পূর্ণ সান্ত্বনা দিতে পারি
যে, আমার প্রভু যীশু খ্রীস্ট, তাঁর সমস্ত দুঃখভোগের সময়, কিন্তু বিশেষত ক্রুশের উপরের
সময়ে, কথায় প্রকাশ করা যায় না,
এমন যন্ত্রণা, ব্যথা, সন্ত্রাশ ও নারকীয় মর্মবেদনায় তাঁকে যে নিমজ্জিত করা হয়েছিল, তার দ্বারা আমাকে নরকের মর্মবেদনা ও
ক্লেশ থেকে তিনি উদ্ধার করেছেন। শাস্ত্রপাঠ: ২থিষলনীকীয় ১:৩-১২; রোমীয় ৩:১৯-২৮; মার্ক ৯:৩৮-৫০ খ্রীস্টের মৃত্যু কি
সত্যই প্রয়োজনীয় ছিল? আমাদের পরিত্রাণ
করার অন্য কোনো পথ কি ছিল না? এই সমস্ত প্রশ্নের কেবল একটাই
উত্তর আছে: আর কোনো পথ ছিল না। এর
কারণ ঈশ্বরের প্রকৃতির মধ্যে আমরা পাই। তিনি পবিত্র ও ধার্মিক। আর
তাই, তিনি ন্যায়বিচারের দাবি সকল কখনও অস্বীকার করতে পারেন না। তা হলে,
তিনি কীভাবে পাপীদের ছেড়ে দিতে পারেন? তারা যেন কখনও পাপ
করেনি, তাদের প্রতি এমন ব্যবহার কি তিনি করতে পারেন? না,
তা কখনও তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। তাই, একটি বিষয় সম্পূর্ণ নিশ্চিত, আর তা হল, তিনি
কখনও পাপকে শাস্তি না দিয়ে ছেড়ে দিতে পারেন না। তিনি যদি পাপকে শাস্তি না দিয়ে
ছেড়ে দেন, তা হলে, তিনি তার দ্বারা নিজেকেই অস্বীকার করবেন, আর শাস্ত্র এ
বিষয়ে আামাদের পরিষ্কার শিক্ষা দেয় যে, তা তিনি কখনও করতে পারেন না। তা হলে, আমরা
দেখতে পাচ্ছি, ঈশ্বরের নিখুঁত বৈশিষ্ট্য যে দাবি করে, তা হল, হয় আমরা যা করেছি,
তার জন্য তিনি আমাদের শাস্তি দিতে বাধ্য, নয় আমাদের পরিবর্তে তিনি একটি
পরিবর্তকে অনুমতি দিতে পারেন, যে আমাদের পরিবর্তে আমাদের শাস্তি গ্রহণ করবে। আর
যীশু তাঁর প্রজাদের উদ্ধার করতে ঠিক এই কাজই করেছেন। আর ঈশ্বরের নিজের ধার্মিকতার বৈশিষ্ট্য মেনে কোন্ শাস্তির প্রয়োজন ছিল? এর একমাত্র উত্তর হল, 'মৃত্যু'। মানুষের ইতিহাসের শুরুতে এ বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছিল, যখন ঈশ্বর আমাদের প্রথম
পিতামাতাকে পাপের প্রতিফল মৃত্যু বলে সতর্ক করেছিলেন (আদি ২:১৭), আর তার দ্বারা তিনি অবশ্যই অনন্ত মৃত্যুকে নির্দেশ
করেছিলেন। কিন্তু মৃত্যর অর্থ, অস্তিত্বহীনতা নয়। এর অর্থ, ঈশ্বরের কাছ থেকে
এবং ঈশ্বরের দেওয়া সমস্ত আশীর্বাদ থেকে দূরবর্তী অনন্তকালীন অস্তিত্ব। এই শাস্তিকে
অনন্তকালীন হতে হবে, কারণ অসীম-অনন্ত ঈশ্বরের বিরুদ্ধে পাপের জন্য প্রয়োজন ছিল
অসীম-অনন্তকালীন শাস্তি। এখন, একটি সসীম প্রাণী যে একমাত্র পদ্ধতিতে অসীম
শাস্তির ঋণ শোধ করতে পারে, তা হল, চিরকাল বা অনন্তকাল ধরে ক্রমশ সেই ঋণ শোধ করা।
কিন্তু সুসংবাদ হল: যেহেতু যীশু নিজে অসীম (ঈশ্বর হওয়ায়)
এবং একই সঙ্গে সসীম (মানুষ হওয়ায়), সেইহেতু সীমিত সময়ের মধ্যে তিনি অসীম
শাস্তি ভোগ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তাই, যদিও তিনি একটি নির্দিষ্ট সীমিত
সময়ের জন্য দুঃখভোগ করেছিলেন, কিন্তু তিনি অসীম হওয়ার কারণে, সেই অসীম পরিমাণ
শাস্তি বা দুঃখ ভোগ করেছিলেন। তাই, তিনি যে দুঃখভোগ করেছিলেন, তা অনন্ত
বিনাশের সমার্থক ছিল। আর তাই, তিনি আমাদেরকে অনন্ত মৃত্যু থেকে উদ্ধার করতে
সক্ষম। তা হলে, যে প্রশ্ন খুব স্বাভাবিক, তা হল, যীশু যদি আমাদের পরিবর্তে আমাদের পাপের
জন্য যে মৃত্যু বরাদ্দ ছিল, তা ভোগ করে থাকেন, তা হলে, আবার আমাদের কেন
মরতে হয়? আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, এখানে আমাদের এই
সত্য উপলব্ধিতে যে সমস্যাকে দেখতে পাই, তার মূল কারণ হল, মৃত্যু সম্বন্ধে
আমাদের ভুল চিন্তা। আমরা মৃত্যুকে আমাদের শরীর ও আত্মার বিচ্ছেদ বা পৃথকীকরণ
বলে চিন্তা করি। আর এটা যথেষ্ট সত্য যে, মৃত্যু শব্দের দ্বারা এই অর্থই সাধারণভাবে
নির্দেশ করা হয়। কিন্তু, বাইবেলে মৃত্যুর অর্থ এখানেই সীমাবদ্ধ নয়, এর মধ্যে অনেক
বিস্তৃত ধারণা বর্তমান। এর মধ্যে যেমন আত্মা ও শরীরের পৃথকীকরণ অন্তর্গত, তেমনই এর
মধ্যে আরও কিছু বিষয় আছে। ঈশ্বর যখন আমাদের প্রথম পিতামাতাকে সতর্ক করেছিলেন,
সেদিন তিনি বলেছিলেন, "যে দিন তার ফল খাবে, সেই
দিন মরবেই মরবে" (আদি ২:১৭)।
এই কারণে, সাধারণ স্বাভাবিক মানুষ সম্বন্ধে বাইবেলে বলা হয়েছে, তারা "নিজের নিজের আপরাধে ও পাপে মৃত"
(ইফিষীয় ২:১)। সবথেকে প্রাথমিক অর্থে, মৃত্যু
হল, ঈশ্বরের কাছ থেকে এবং ঈশ্বরে মানুষ যে সমস্ত বিষয়ের অধিকারী হওয়ার জন্য
সৃষ্ট হয়েছিল, তাদের থেকে পৃথকীকরণ। তাই, আদম ও হবা যে মুহূর্তে সেই নিষিদ্ধ
গাছের ফল খেয়েছিল, সেই মুহূর্তেই তাদের মৃত্যু শুরু হয়েছিল। কিন্তু সেখানেই
শেষ হয়নি। পরবর্তী কালে, আদম ও হবাকে শরীর ও আত্মার পৃথকীকরণের অভিজ্ঞতা ভোগ
করতে হয়েছিল। কিন্তু তাতেও শেষ হয়নি। মৃত্যু তখনও সম্পূর্ণ হবে না, যতদিন না পূর্ণ
মানুষকে- অর্থাৎ, তার শরীর ও আত্মাকে- ঈশ্বরের শেষবিচারের দিনে বাইরের অন্ধকারে
ফেলে দেওয়া হবে, যেখানে কান্না ও দাঁত ঘষা হবে (মথি ২২:১৩)।
অন্যদিকে, ঈশ্বরের প্রজাদের প্রতি যে পরিত্রাণ দত্ত হয়েছে, তা একটি প্রক্রিয়াও
বটে। এই প্রক্রিয়া হল, মৃত্যুর পরিধি থেকে ধাপে ধাপে অগ্রসর হওয়া এবং জীবনের আধিকারী
হওয়া। পবিত্র আত্মার দ্বারা যখন আমাদের আত্মা (বা প্রাণ) জীবিত হয়, তখন
এই প্রক্রিয়া শুরু হয়। একে প্রথম পুনরুত্থান বলা হয়েছে। "যে কেউ এই প্রথম পুনরুত্থানে অংশী
হয়, সে ধন্য ও পবিত্র, তাদের উপর দ্বিতীয় মৃত্যুর কোনো কর্তৃত্ব নেই" (প্রকাশিত বাক্য ২০:৬)। তাই, একজন খ্রীস্টবিশ্বাসী, যে হৃদয় ও আত্মায় নতুনীকৃত
হয়েছে (১ যোহন ৩:৪), তার মধ্যে ইতিমধ্যে অনন্ত জীবন শুরু হয়েছে।
কিন্তু তার শরীর এখনও পুনরুত্থানের জীবনে অংশগ্রহণ করেনি। তার শরীর তখনও পাপ ও
মৃত্যুর শরীর হয়ে ক্রমশ অস্তিত্ব বজায় রাখে (রোমীয় ৭:২৪ পদে
পৌল যেমন আমাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন)। এখন, ঈশ্বর যখন আমাদের নতুনীকৃত আত্মা
দিয়েছিলেন, তখন তিনি ইচ্ছা করলে, অবশ্যই আমাদের নতুনীকৃত শরীরও দিতে পারতেন। কিন্তু
তিনি তা করেননি। পরিবর্তে, তিনি আমাদের জন্য যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা হল, সেই শেষদিন
যতদিন না আসে, ততদিন আমরা নতুনীকৃত শরীরের অধিকারী হব না। হয়ত এর প্রধান কারণ হল, এর
দ্বারা আমরা আমাদের সমাজে নতুনজন্ম পাইনি যারা, তাদের সঙ্গে একসঙ্গে ক্রমশ
থাকার সুযোগ পেয়েছি। উদাহরণস্বরূপ, একজন বিশ্বাসীনী স্ত্রী, তার অবিশ্বাসী
স্বামীর সঙ্গে ক্রমশ বাস করতে পারে, আর কে জানে, তার স্বামীও হয়ত একদিন বিশ্বাসী
হতে পারে (১পিতর ৩:১-২)। আমরা যদি মৃত্যু থেকে জীবনে এমনভাবে
পার হয়ে যেতাম যে, আমরা মুহূর্তের মধ্যে সম্পূর্ণ তৈরি বিষয়ে (instantly
finished product) রূপান্তরিত হতাম, তা হলে, আমাদের সমাজে এখনও
যারা পাপে ও আপরাধে মৃত, আমরা তাদের সঙ্গে বাস করতে পারতাম না। তাই, খ্রীস্টবিশ্বাসীর
কাছে, শারীরিক মৃত্যু হল, জীবনের উদ্দেশে অগ্রসরের পথে আরও একটি পদক্ষেপ। কেন?
কারণ, "ধার্মিকদের আত্মা সিদ্ধিপ্রাপ্ত
(নিখুঁতীকৃত) হয়" (ইব্রীয় ১২:২৩)। আর এই ঘটনা যখন ঘটে, তখন পাপ ও মৃত্যুর অধীন শরীর আর মন্দের প্রতি আত্মাকে
(প্রাণকে) প্রভাবিত করতে পারে না। কিন্তু বিশ্বাসীদের জন্য তা-ও সব নয়। তাদের
ক্ষেত্রে, তাদের শরীর পর্যন্ত কবরে খ্রীস্টের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে, যা
পুনরুত্থানের অপেক্ষা করে। আর তাই, আমাদের যে মৃত্যু ভোগ করতে হয়, সেই মৃত্যুর শেষ
দিকের অভিজ্ঞতা, যা হল শরীর ও আত্মার পৃথকীকরণ, তা কোনোভাবেই আমাদের জন্য পাপের
শাস্তি নয়। খ্রীস্ট সেই শাস্তি আমাদের পরিবর্তে গ্রহণ করেছেন। আমাদের জন্য
মৃত্যু হল, মৃত্যু থেকে জীবনে উত্তীর্ণ হবার পথে সর্ব শেষ ধাপের আগের ধাপ বা
দশা। শেষ ধাপ বা দশা আসবে, যখন শেষদিনে আমাদের শরীর আমাদের প্রভুর মহিমান্বিত শরীরে
উত্থাপিত হবে। এখানেই আমরা উপলব্ধি করি, তাঁর প্রজাদের জন্য যীশু যে ক্রুশে মৃত্যুবরণ
করেছেন, তা জানার মধ্যে কত মহান সান্ত্বনা বর্তমান। ফলস্বরূপ, সেই
মৃত্যু তাঁর একার ছিল না। কারণ, যীশু খ্রীস্ট ও তাঁর প্রজাদের মধ্যে যৌথ
সংহতি বর্তমান (আরও মনে রাখব, এ হল পাপে পতিত আদম ও তার প্রজাদের মধ্যে যে যৌথ
সংহতি ছিল, তার সদৃশ)। এ কথা সত্য, আমরা তাঁর সঙ্গে মরেছি এবং জীবনের নতুনতায় উত্থাপিতও
হয়েছি। অন্য ভাষায়, অন্যদিকে, প্রতিনিধিত্বের নীতি এখানে কাজ করে, যা হল, তাঁর
প্রজাদের জন্য খ্রীস্ট কাজ করেছেন, বা তাদের পক্ষে তিনি কাজ করেছেন। আবার
অন্যদিকে, এখানে অপরিহায্য ঐক্যের নীতি কাজ করেছে, তিনি যাদের জন্য কাজ
করেছেন, তাদের প্রতি তিনি প্রকৃত অর্থে নতুনীকৃত মানব প্রকৃতি প্রয়োগ
করেন। সীমাহীনভাবে যে পবিত্র আত্মা তাঁর মধ্যে বাস করেন, সেই পবিত্র আত্মা
আমাদের মধ্যেও বাস করেন। আর আমরা খ্রীস্টের সাদৃশ্যে প্রকৃত অর্থে নতুন সৃষ্টি হই।
প্রৈরিতীক বিশ্বাস-সূত্রের মধ্যে যে কথা সবথেকে বেশি সমস্যার সৃষ্টি করেছে, তা
হল, "তিনি পরলোকে
নামলেন।" এখন, এই কথাকে কোন অর্থে প্রাচীন
বা প্রারম্ভিক মণ্ডলী প্রৈরিতীক বিশ্বাস-সূত্রের ন্যায় একটি প্রাচীন
বিশ্বাস-সূত্রে অন্তর্গত করেছিল, সে বিষয়েও যথেষ্ট মতানৈক্য বর্তমান। এই সমস্যা
থাকা সত্ত্বেও মণ্ডলী এই কথাকে প্রৈরিতীক বিশ্বাস-সূত্র থেকে বাদ দেয়নি। তা হলে,
আমরা এই কথাকে কোন অর্থে উপলব্ধি করব? আমরা নিশ্চয়ই এই কথাকে
সেই অর্থে গ্রহণ করব না যে, খ্রীস্ট তাঁর মৃত্যর পর সেখানে গিয়েছিলেন,
যেখানে হারিয়ে যাওয়া আত্মারা চিরকালের জন্য যায়। তিনি যে সেখানে যাননি, তা আমরা জানি,
কারণ, তাঁর সঙ্গে যে দস্যুর মৃত্যু হয়েছিল, মৃত্যুর পূর্বে তিনি তাকে বলেছিলেন, সেদিনই
সে যীশুর সঙ্গে পরমদেশে উপস্থিত হবে (লূক ২৩:৪৩)। তাই,
এই কথার যে বাইবেলভিত্তিক অর্থকে আমরা চিন্তা করতে পারি, তা হল, খ্রীস্ট
ক্রুশের উপর যে দুঃখভোগ করেন, তাই-ই ছিল তাঁর পরলোকে (নরকে) নামা। এই কথা
প্রথম শুনলে অদ্ভুত বা অবাস্তব বলে মনে হতে পারে, কারণ ক্রুশের উপর মাত্র কয়েক
ঘণ্টার দুঃখভোগের দ্বারা যীশু কীভাবে পূর্ণ মাত্রায় নরক ভোগ করতে পারেন?
কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে, তিনি ছিলেন একাধারে ঈশ্বর ও মানুষ।
আমাদের আরও মনে রাখতে হবে, তাঁর মানব প্রকৃতি ছিল সম্পূর্ণ পাপশূন্য। তিনি
যখন ঈশ্বরের দ্বারা পরিত্যক্ত হয়েছিলেন, তখন তা তাঁর পক্ষে কতখানি কষ্টকর
ছিল, তা আমাদের কল্পনা করার প্রয়োজন আছে। হ্যাঁ, যীশু খ্রীস্টের অদ্বিতীয়তার
কারণে, ঈশ্বরের অসীম ক্রোধ ও অভিশাপ পূর্ণ মাত্রায়, যা হল দুষ্টদের প্রতি বিনাশ,
তা ক্রুশের উপর ভোগ করা তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়েছিল। আর যেহেতু তিনি তা ভোগ করেছেন,
সেইহেতু বিশ্বাসী আমরা এ বিষয়ে নিশ্চিত যে, ঈশ্বরের ন্যায়বিচার পূর্ণ মাত্রায় পরিতুষ্ট
হয়েছে, তাই আমরা সেই বিনাশ এড়াতে সক্ষম হব। আর এখানেই আমরা আমাদের প্রত্যাশার
পক্ষে খ্রীস্টবিশ্বাসের দৃঢ় ভিত্তিকে দেখতে পাই। প্রশ্ন হল, সত্যিই কি কোনো নরক আছে? খ্রীস্টের ক্রুশের
প্রতি যখন আমরা তাকাই, তখন আমরা এর উত্তর পাই। কিন্তু সেটাই সব নয়: আমরা যদি সেই ক্রুশের দিকে বিশ্বাসে তাকাই, তা হলে, আমরা আরও জানি যে, যীশু
কখনও আমাদেরকে সেই নরকের মারাত্মক বিভিষীকার অভিজ্ঞতা ভোগ করতে দেবেন না।