HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 17_QUESTIONS 45
2020.03.12 13:53
প্রভুর দিন ১৭
হাইডেলবার্গ প্রশ্নোত্তর ৪৫। প্রশ্ন: খ্রীস্টের পুনরুত্থান
আমাদের কী উপকার করে? উত্তর: প্রথমত, তাঁর পুনরুত্থানের
দ্বারা তিনি মৃত্যুর উপর জয়লাভ করেছেন,
যেন আমাদেরকে তিনি তাঁর ধার্মিকতায় অংশীদার করতে পারেন, যা তিনি তাঁর মৃত্যুর দ্বারা অর্জন করেছেন; দ্বিতীয়ত, আমাদেরকে তাঁর ক্ষমতায়
নতুন জীবনে উত্থিত করা হয়েছে; এবং তৃতীয়ত, আমাদের প্রতি খ্রীস্টের পুনরুত্থান হল, আমাদের আশীর্বাদপূর্ণ
পুনরুত্থানের প্রতি নিশ্চিত বন্ধক (জামানত)। শাস্ত্রপাঠ: ২করিন্থীয় ১৫:১-২৮; যোহন ৫:১৯-২৯ প্রথমেই,
পুনরুত্থানের অর্থ সম্বন্ধে আমাদের সঠিক ধারণার আধিকারী হতে হবে। আমরা যখন
খ্রীস্টের পুনরুত্থানের কথা বলি, তখন তার দ্বারা কী বলতে চাই? এর বাইবেলভিত্তিক অর্থ হল, যীশুর মৃতদেহ পুনরায় জীবিত হয়েছিল। হ্যাঁ, এ
কথা সত্য, খ্রীস্ট যখন পুনরায় জীবিত হয়েছিলেন, তখন তাঁর সেই পুনরুত্থানের দেহের বৈশিষ্ট্য আলাদা ছিল। কিন্তু
পরিচয়ের দিক থেকে তা একই
দেহ ছিল। তাই, তাঁর দেহে তাঁর ক্ষত সকল তখনও দৃশ্যগ্রাহ্য ছিল। অবশ্য, আজ আমরা এমন কিছু ঈশতত্ত্ববিদকে দেখতে পাই,
যাঁরা আমাদের এই বিজ্ঞানের যুগে, যীশুর শিষ্যদের প্রতিবেদনকে সম্ভবত আক্ষরিক অর্থে সত্য নয় বলে,
তাঁদের মত প্রকাশ করে থাকেন। তাঁদের এই কথার পিছনে যে কারণকে আমরা উল্লেখ করতে
পারি, তা হল, আজ আমরা যে বিজ্ঞানভিত্তিক
জ্ঞানের অধিকারী, তাতে মানুষের দেহ মৃত্যর পর পুনরায় জীবিত হতে পারে না। তাই,
আজ আমরা অনেক মানুষকে দেখতে পাই, যাঁরা খ্রীস্টের পুনরুত্থানের ঘটনাকে পৌরানিক কাহিনী অথবা প্রতীকী বলে
বর্ণনা করে থাকেন। আমরা এমন অনেক ঈশত্ত্ববিদকে দেখতে পাই, যাঁরা টেলিভিশেনের
মাধ্যমে এই কথা বলে থাকেন। তাঁরা যদিও এমন কথা বলেন, "আমি যীশুর
পুনরুত্থানে বিশ্বাস করি।" কিন্তু তাঁরা যে
অর্থে যীশুর পুনরুত্থানকে বিশ্বাস করেন, তা আমাদের চিন্তায় যীশুর পুনরুত্থান থেকে
সম্পূর্ণ আলাদা। তাই তাঁদের যখন একটু গভীর অর্থে প্রশ্ন করা হয়, "আপনি কি এ-ও
বিশ্বাস করেন যে, কার্ল মার্কস জীবিত?" তখন
তাঁরা তার উত্তরেও "হ্যাঁ" বলে
থাকেন। অর্থাৎ, তাঁদের ঈশতত্ত্বে, 'পুনরুত্থান' শব্দের নতুন অর্থ করা হয়েছে। তাঁদের কাছে, "পুনরুত্থান" আর মৃত দেহের জীবিত হওয়া নয়। না, তাঁদের কাছে এর সহজ অর্থ হল, "সেই ব্যক্তি –
তাঁর শিক্ষার মাধ্যমে – অন্য মানুষদের মধ্যে বেঁচে থাকেন।"
এখন, বাইবেল কখনও এই অর্থে পুনরুত্থানের কথা বলে না। না, বাইবেল যে অর্থে
পুনরুত্থানের কথা বলে, তা হল, মৃতদেহরা পুনরায় জীবিত হয়। আর যীশুর শিষ্যরা এ বিষয়ে লিখেছেন,
যেহেতু এই ঘটনা সত্যি সত্যি ঘটেছিল। এখন, এমন অলৌকিক ঘটনা কীভাবে ঘটেছিল, তা চিন্তা
করে, আমরা বিস্মিত না হয়ে পারি না। আর এর যে উত্তর আজ আমরা পাই, তা শিষ্যদের সময় যে উত্তর
ছিল, তা থেকে পৃথক নয়, পরিবর্তে তার সম্পূর্ণ অবিকল। আমরা জানি না, মৃতদেহ কীভাবে পুনরায় জীবিত
করা যায়, কিন্তু এ কথাও সত্য যে, আমরা যে সমস্ত বিষয় ব্যাখ্যা করতে পারি না, ঈশ্বর সেই সমস্ত বিষয় সাধন
করতে সক্ষম। বাস্তব হল, এটাই কি সত্য নয় যে, আমাদের প্রতিদিনের অভিজ্ঞতায়
এমন অনেক ঘটনা ঘটে, যাদের কেউ উপলব্ধি করতে পারে না? উদাহরণস্বরূপ, আমার মনের মধ্যে একটি চিন্তা কীভাবে আমার সমস্ত দেহকে স্থানান্তরিত করতে
পারে?
উত্তর হল, আমরা তা সঠিকভাবে জানি না। কিন্তু তা ঘটে থাকে। তা হলে, বিস্ময়কর
ঈশ্বরের বিষয় আমরা কেন এমন চিন্তা করব যে, আমরা যা উপলব্ধি করতে পারি না, তিনি তা
করতে অক্ষম? আমরা বিশ্বাস করি, এই বিষয়টির উপর জোর দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ কেউ
কখনও খাঁটি বিশ্বাসী হতে পারে না, যদি না সে এমন ঈশ্বরে বিশ্বাস করে, যিনি বিস্ময়কর
কাজ করতে সক্ষম। যীশুর দৈহিক পুনরুত্থানের বিশ্বাসকে স্বীকার না করে,
কেউ কখনও খাঁটি
খ্রীস্টবিশ্বাস হতে পারে না। আমাদের সত্য স্বীকার করতে হবে। এই ঘটনা যদি সত্যি না ঘটে থাকত, তা
হলে, খ্রীস্টবিশ্বাসী হয়ে
লাভ কী?
যে "পরিত্রাতা" মৃত্যু থেকে
উদ্ধার করতে পারেন না, তাঁর থেকে পরিত্রাতা না থাকাই ভালো। অন্যদিকে, এই সমস্ত ঘটনা যদি সত্যি ঘটে থাকে, তা
হলে, আমরা কী চিন্তা করব? তা হলে, এটা সম্পূর্ণ পরিষ্কার যে,
প্রেরিতশিষ্যরা সেই বার্তা
সকলের কাছে পৌঁছে দেবার যে কথা চিন্তা করেছিল, তা ছিল সম্পূর্ণ সঠিক। কারণ সেই বার্তা এতখানি গুরুত্বপূর্ণ
ছিল যে, তা সমগ্র পৃথিবীকে আন্দোলিত
করার ক্ষমতার অধিকারী ছিল। প্রশ্নোত্তর এই সত্যের প্রতিই আমাদের দৃষ্টি
আকর্ষিত করেছে। খ্রীস্ট যদি সত্যি সত্যি তাঁর কবর থেকে উঠে থাকেন, তা
হলে, মানুষের চূড়ান্ত সমস্যার
উত্তর পাওয়া গেছে, যে চূড়ান্ত সমস্যা হল, তাঁর মৃত্যু। তিনি যদি সত্যি
জীবিত হয়ে থাকেন, তা হলে, মৃত্যুর
উপর জয়লাভ সম্ভব হয়েছে। তাই, মৃত্যুকে "চূড়ান্ত বিষয়" বা "শেষকথা" বলে চিন্তা করার কোনো প্রয়োজন আর যীশুতে বিশ্বাসীদের
নেই। কেন? কারণ, তিনি
প্রতিজ্ঞা করেছেন, আমরাও তাঁর গৌরবপূর্ণ অভিজ্ঞতায় অংশ নেব (যোহন ৫:২৮-২৯)। আর এটাই সব নয়। বাস্তব হল, আমরা
ইতিমধ্যে, এ বিষয়ে ডাউন
পেইমেন্ট বা প্রথম
কিস্তি লাভ করেছি, যাকে বাইবেলে প্রথম পুনরুত্থান বলা হয়েছে (প্রকাশিত বাক্য ২০:৫-৬)। প্রথম পুনরুত্থানকে বাইবেলের বেশিরভাগ স্থানে নতুনজন্ম বলা হয়েছে। এ
হল, পবিত্র আত্মার মাধ্যমে, ঈশ্বরের সেই কাজ, যার দ্বারা আমরা নতুন সৃষ্টি হই। তাই, অন্যভাবে বলা যায়,
বিশ্বাসী ইতিমধ্যে সেই নতুন
জীবনে অংশগ্রহণ করেছে, যা কেবল খ্রীস্ট তাঁর পুনরুত্থানের গুণে অধিকারী।
আর এ হল, দ্বিতীয়
কিস্তির গ্যারান্টি।
খ্রীস্টের দ্বিতীয় আগমনের সময়, সেই শেষদিনে সেই দ্বিতীয় কিস্তি আমাদের দেওয়া হবে, যখন আমাদের শরীরকে কবর থেকে জীবিত করা
হবে। অর্থাৎ, আমাদের আত্মা
(বা প্রাণ) যীশু খ্রীস্টের পুনরুত্থানের জীবনে ইতিমধ্যে অংশ নিয়েছে। আর
আমাদের শরীরও একদিন একই
প্রকার রূপান্তর লাভ করবে। আমাদের প্রভুর দ্বিতীয় আগমনে আমাদের শরীর পুনরায় এই
পৃথিবীর উপর দাঁড়াতে চলেছে।