메뉴 건너뛰기

Grace Xn Library

প্রভুর দিন

হাইডেলবার্গ প্রশ্নোত্তর

। প্রশ্ন: তা হলে, মানুষ যা করতে পারে না, তাঁর বিধানে তা তার কাছ থেকে আশা (দাবি) করে, ঈশ্বর কি মানুষের প্রতি অন্যায় করেননি?  

উত্তর: আদৌ নয়; কারণ ঈশ্বর মানুষকে তা করতে সক্ষম করে সৃষ্টি করেছিলেন; কিন্তু দিয়াবলের প্ররোচনার মাধ্যমে, মানুষ তার নিজের ইচ্ছাপূর্ণ অবাধ্যতার দ্বারা, নিজেকে ও তার বংশধরদেরকে এই সমস্ত উপহার থেকে বঞ্চিত করেছে।

১০। প্রশ্ন: ঈশ্বর কি এমন অবাধ্যতা ও ধর্মভ্রষ্টতাকে শাস্তি না দিয়ে ছেড়ে দেবেন?

উত্তর: কোনোক্রমেই তিনি তা করবেন না; কিন্তু আমাদের জন্মগত পাপময়তা এবং একইসঙ্গে আমাদের সমস্ত বাস্তব পাপের দ্বারা তিনি অসন্তুষ্ট হয়েছেন; তাই তাঁর ধার্মিক বিচার অনুসারে, সময়ের মধ্যে ও অনন্তে তিনি তাদের শাস্তি দেবেন, যেমন তিনি ঘোষণা করেছেন, "যে কেউ এই বিধানের কথা সকল পালন করবার জন্য সেই সকল অটল না রাখে, সে শাপগ্রস্ত” (২বিবরণ ২৭:২৬)।

১১। প্রশ্ন: তা হলে, ঈশ্বর কি করুণাময় নন?

উত্তর: ঈশ্বর নিঃসন্দেহে করুণাময়, কিন্তু তিনি একই সঙ্গে ন্যায়বিচারক; অতএব, মহান ঈশ্বরের বিরুদ্ধে যে পাপ করা হয়েছে, তাঁর ন্যায়বিচার সেই পাপকে চরম শাস্তি, অর্থাৎ, শরীর ও আত্মার অনন্তকালীন শাস্তি দিতে বাধ্য করেছে।

শাস্ত্রপাঠ: গীত ১০৩:১~১৮; যাত্রা ৩২:১~৩৪:১৭; নহূম ১:১~৮

প্রশ্নোত্তরের পূর্ববর্তী বিভাগে, আমরা শিখেছি, আমরা ঈশ্বরের আজ্ঞা পালন করতে সক্ষম নই, আমরা আরও শিখেছি, ঈশ্বর আমাদের কাছে দাবি করেন, আমরা যেন নিখুঁত হই। এর প্রেক্ষিতে আমরা সবাই যে কথা বলতে চাই, তা হল, “এটা ঠিক নয়, এটা অন্যায়! কারণ, যে দাবি পূরণ করতে আমরা সক্ষম নই, আমাদের কাছে সেই নিখুঁততা দাবি করাটা ঈশ্বরের ন্যায্য কাজ নয়।” একে আমরা এইভাবে উপলব্ধি করতে পারি: ধরুন, না হাঁটার জন্য ঈশ্বর একটা মাছকে শাস্তি দিলেন, কিংবা না ওড়ার জন্য তিনি গরুকে শাস্তি দিলেন! আমরা কি নিঃসন্দেহে বলতে পারি না, ঈশ্বর যদি তা করেন, তা হলে, সেই কাজ অন্যায় হবে? অবশ্যই তা অন্যায় হত, বা ঠিক হত না। কারণ, ঈশ্বর যা করার ক্ষমতা দিয়ে কোনো জীবকে সৃষ্টি করেননি, অথচ তিনি তা তার কাছ থেকে দাবি করছেন। তা হলে, মাছ বা গরুর পরিবর্তে আমরা মানুষের সম্বন্ধে একই কথা বলতে পারি; মাছ যেমন হাঁটতে পারে না, কিংবা গরু যেমন উড়তে পারে না, ঠিক তেমনই মানুষও নিখুঁতভাবে ঈশ্বরের আজ্ঞা পালন করতে পারে না। কিন্তু, সত্য হল, মাছ ও গরুর প্রতি যে কথা প্রযোজ্য, মানুষের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়। কারণ, হ্যাঁ, ঈশ্বর যন মাছকে সৃষ্টি করেছিলেন, তখন তিনি তাকে হাঁটবার ক্ষমতা দেনিন; কিংবা গরুকে যখন সৃষ্টি করেছিলেন, তখন তিনি তাকে ড়বার ক্ষমতা দেননি। কিন্তু ঈশ্বর যখন মানুষকে সৃষ্টি করেছিলেন, তখন তাকে তাঁর আজ্ঞা পালন করার ক্ষমতা দিয়েছিলেন, তখন সে ঈশ্বরের আজ্ঞা পালন করতে সক্ষম ছিল। সে শুরুতে যা করতে সক্ষম ছিল, এখন সে তা করতে আর সক্ষম নয়, এবং এটা সম্পূর্ণভাবে তার নিজের দোষ।

আসুন, একটা উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টা বুঝতে আমরা চেষ্টা করি। ধরুন, এক বাবা ছিলেন, যিনি খুব ধনী ছিলেন। তাই, তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন, তাঁর প্রত্যেক সন্তানকে তিনি তাঁর বিশাল সম্পত্তির উত্তরাধিকারী করবেন, প্রত্যেককে তিনি একটা করে বিরাট বাড়ী দেবেন এবং প্রত্যেকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে অনেক টাকা জমা রাখবেন, যাতে তা থেকে তারা যে সুদ পাবে, তাতে তারা নিশ্চিন্তে তাদের সারা জীবন কাটিয়ে দিতে পারবে। এখন, সেই বাবা যদি এমন আশা করেন যে, তাঁর সন্তানরা যে সম্পত্তির মালিক হয়েছে, তারা সেই সম্পত্তি ভালো করে যত্ন করে রাখবে, তা হলে, সেই আশা করাটা কি অন্যায় হবে? ধরুন, তাঁর এক ছেলে, জুয়া খেলে তার সব অর্থ উড়িয়ে দিল, এমনকী এত ধার করল যে, তার বাড়ীটা পর্যন্ত বিক্রি করে দিতে বাধ্য হল। এখন, যদি সেই বাবা সেই ছেলেকে বলেন, “আমার কাছে আর কোনো অর্থ চেয়ো না। তোমার সারা জীবন চালাবার জন্য যথেষ্ট অর্থ আমি তোমাকে দিয়েছিলাম, কিন্তু তুমি তোমার নিজের দোষে এখন নিঃস্ব হয়েছ,” তা হলে, কি তা অন্যায় হবে? না, তা কখনও অন্যায় হতে পারে না। ঠিক একইভাবে, ঈশ্বর যখন আমাদের কাছে তাঁর আজ্ঞার প্রতি নিখুঁত বাধ্যতা দাবি করেন, তখন তা কোনোভাবেই অন্যায় দাবি নয়। তাই, বাইবেল এমন কথা বলে, আমরা ঈশ্বরের যে কোনো একটা আজ্ঞা অবাধ্য হওয়ার দ্বারা, তা করে থাকি। ঈশ্বর আমাদের যে সমস্ত আজ্ঞা দিয়েছেন, তা যদি আমরা সম্পূর্ণভাবে পালন না করি, তা হলে, আমরা ঈশ্বরের ন্যায্য বিচারের নিচে অবস্থান করি (২বিবরণ ২৭:২৬)। তাই, আমাদের যে কথা স্মরণ করতে হবে, তা হল, মানুষ তার সৃষ্টির শুরুতে ঈশ্বরের সমস্ত দাবি পূর্ণ করতে সক্ষম ছিল। কিন্তু যে কারণে, তার পক্ষে এখন তা আর সম্ভব নয়, বা সত্য নয়, তা হল, ঈশ্বর তাকে যে উত্তরাধিকার দিয়েছিলেন, মানবজাতি তা নষ্ট বা তছনছ করেছে। আর, তার জন্য ঈশ্বর যখন তাকে দোষী সাব্যস্ত করেন, কিংবা আমাদের অব্যাহতি দিতে নারাজ হন, তখন ঈশ্বর সম্পূর্ণভাবে ন্যায্য কাজ করে থাকেন।

একে দেখে আমরা ঈশ্বরকে কর্কশ বা নিষ্ঠুর বলে মনে করতে পারি। তাই, সঙ্গে সঙ্গে যে প্রশ্ন আমাদের মাথায় আসে, তা হল, “কিন্তু, ঈশ্বর কি একাধারে করুণাময় ঈশ্বর নন?” এর উত্তর আমরা বাইবেলে বারংবার পেয়ে থাকি, আর তা হল, “হ্যাঁ, অবশ্যই, ঈশ্বর করুণাময়” (উদা. যাত্রা ৩৪:৬~৭; গীত ১০৩:৮~৯)। কিন্তু ঈশ্বর করুণাময় হলেও, একটা বিষয় তিনি কখনও করবেন না। আর তা হল, তিনি কখনও তাঁর ন্যায়বিচার আপোষ করবেন না। তিনি কখনও এমন কথা বলবেন না, “মানুষ যদিও এত বড়ো পাপ করেছে, ঠিক কথা, তবু আমি তা ছেড়ে দিতে বা আব্যাহতি দিতে পারি।” না, ঈশ্বরের ন্যায়বিচার তাঁর করুণার ন্যায় একইভাবে মহৎ (এবং অপরিবর্তনীয়)। তিনি কখনও নিজেকে অস্বীকার করতে পারেন না (২তীমথিয় ২:১৩)। তাঁর করুণার ন্যায়, তাঁর ন্যায়বিচারও তিনি রক্ষা করতে বাধ্য। আর এর অর্থ হল, আমরা যে সমস্ত পাপ করেছি, তার জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে; এবং নিখুঁত ন্যায়বিচারের যে ক্ষতিপূরণকে দাবি করে, তা হল অসীম শাস্তি। যেহেতু, যে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে আমরা পাপ করেছিলাম, তিনি এক অসীম ঈশ্বর, এবং ‘অসীম’ কথার অর্থ, “পরিমাপ বা সীমাহীন।” তাই, এর জন্য যে ন্যায্য ও সঠিক শাস্তি ছিল, তা-ও “পরিমাপহীন।” আর এর অর্থ, যারা পাপের দ্বারা হারিয়ে গিয়েছিল, তারা অনন্ত শাস্তি পাবার যোগ্য। এ বিষয়ে আমরা প্রশ্নোত্তরের পরবর্তী অংশে আরও শিখব। কিন্তু তার আগে, আমাদেরকে উপলব্ধি করতে হবে, যারা তাদের পাপের জন্য অনুতাপ করে এবং প্রভু যীশুতে বিশ্বাস করে, তাদের প্রতি ঈশ্বর কত মহৎ করুণাপূর্ণ পরিত্রাণ যোগান দিয়েছেন।

번호 제목 글쓴이 날짜 조회 수
19 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 19_QUESTIONS 50~52 Sujoy 2020.03.12 3465
18 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 18_QUESTIONS 46~49 Sujoy 2020.03.12 507
17 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 17_QUESTIONS 45 Sujoy 2020.03.12 511
16 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 16_QUESTIONS 40~44 Sujoy 2020.03.12 623
15 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 15_QUESTIONS 37~39 Sujoy 2019.10.16 920
14 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 14_QUESTIONS 35~36 Sujoy 2019.10.16 1387
13 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 13_QUESTIONS 33~34 Sujoy 2019.10.16 613
12 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 12_QUESTIONS 29~31~32 Sujoy 2019.10.16 2533
11 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 11_QUESTIONS 29~30~28 Sujoy 2019.10.16 1815
10 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 10_QUESTIONS 27~28 Sujoy 2019.10.16 1376
9 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 09_QUESTIONS 26 Sujoy 2019.10.16 635
8 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 08_QUESTIONS 24~25 Sujoy 2019.08.01 2594
7 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 07_QUESTIONS 20~23 Sujoy 2019.08.01 3296
6 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 06_QUESTIONS 16~19 Sujoy 2019.08.01 643
5 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 05_QUESTIONS 12~15 Sujoy 2019.06.20 1097
» HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 04_QUESTIONS 09~11 Sujoy 2019.06.12 844
3 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 03_QUESTIONS 06~08 Sujoy 2019.06.04 119403
2 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 02_QUESTIONS 03~05 Sujoy 2019.05.28 613
1 HEIDELBERG CATECHISM_LORD'S DAY NO. 01_QUESTIONS 01~02 Sujoy 2019.05.26 501

Powered by XE.